চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে নানা কারণে বনিবনা ছিল না স্ত্রীর। তাই তার নিজের দুই বছরের শিশুকে নির্যাতনের ভিডিও স্বামীকে পাঠান ক্ষুব্ধ স্ত্রী। পরে নির্যাতিত শিশুকে উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ।

এদিকে, শিশুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মা-সহ ওই শিশুকে আদালতের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শাহরাস্তি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান।

উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের হাড়িয়া গ্রামের নূরুল আমিনের মেয়ে পারভীন আক্তারের তিন বছর আগে বিয়ে হয় কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার আশিয়াদারি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে প্রবাসী মহিনউদ্দিনের সঙ্গে। তাদের সংসারে ফাহাদ (২) নামে একটি শিশুপুত্র রয়েছে। 

বিয়ের এক বছর পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দিলে স্ত্রী পারভীন আক্তার বাবার বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং লিগ্যাল এইড চাঁদপুর কার্যালয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভরণপোষণ বাবদ প্রতি মাসে আট হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, প্রবাসী স্বামী মহিনউদ্দিন ঠিকমতো ওই টাকা না দিতে পারায় সম্প্রতি পারভীন তাদের দুই বছরের শিশুপুত্র ফাহাদকে বর্বরোচিত নির্যাতন করে তার ভিডিও ধারণ করে স্বামীকে পাঠান। শিশুটির বাবা ওই ভিডিও দেখে সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মনোহরগঞ্জ এলাকার  বিভিন্নজনকে অনুরোধ করেন।

ইতোমধ্যে সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে আসে।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হুমায়ুন রশিদ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু ইসহাক উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জোবায়েদ কবির বাহাদুরকে সঙ্গে  নিয়ে শিশুটির নানার বাড়ি হাড়িয়া গ্রামের দুলাল মেম্বারের বাড়িতে যান। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য  ভর্তি করান। 

ইউএনও হুমায়ুন রশিদ জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওর পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা পেলে পরবর্তী কাজ  সম্পন্ন করা হবে।