নেত্রকোনায় শিশু হত্যার দায়ে বাবা-ফুপার যাবজ্জীবন
নেত্রকোনায় দাম্পত্য কলহের জের ধরে শিশু আলমগীরকে (১০) হত্যার দায়ে তার বাবা ও ফুপাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। নেত্রকোনার অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. আবদুল হামিদ আজ রোববার দুপুরে এ রায় দেন।
সাজা পাওয়া আসামিরা হলেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার ফচিকা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন (৩৫) ও বায়রাউড়া গ্রামের আবু চাঁন (৩৮)।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফচিকা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী হাজেরা বেগমের দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। কলহ চরম আকার ধারণ করলে গিয়াস উদ্দিন একপর্যায়ে আলমগীর তাঁর ছেলে নয় বলে স্ত্রীকে অপবাদ দেন এবং তাঁকে মারপিটও করতে থাকেন। স্বামীর অপবাদ ও নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে হাজেরা বাবার বাড়ি চলে যান। স্ত্রীকে শায়েস্তা করতে গিয়াস উদ্দিন ও তাঁর ভগ্নিপতি আবু চান ২০০৫ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে আলমগীরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর লাশ কাটলীবন্দে ফেলে রেখে স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন গিয়াস উদ্দিন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরের দিন হাজেরা বাদী হয়ে স্বামী গিয়াস উদ্দিন ও ভগ্নিপতি আবু চানকে আসামি করে নেত্রকোনা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বিচারক আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল আলম প্রদীপ। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন শিবলী সাদি।