ভারত পাড়ি দিলেন দেবীগঞ্জের ১৪৭ জন

পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সদ্যবিলুপ্ত কোটভাজনী ও বালাপাড়া ছিটমহলের ২৮টি পরিবারের ১৪৭ সদস্য স্থায়ীভাবে ভারতে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের গাজোকাঠি হাই স্কুল মাঠে চেকিং ও লোডিং পয়েন্ট থেকে চারটি বাস ও সাতটি ট্রাকে মালামালসহ নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তের দিকে রওনা দেন তাঁরা।
গাজোকাঠি হাই স্কুল মাঠে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আযম বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি রমাকান্ত গুপ্তের কাছে এই ১৪৭ জনকে হস্তান্তর করেন। পরে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দেওয়া গাড়িবহর চিলাহাটি সীমান্তে নিয়ে যান।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আযম জানান, সোয়া ১১টার দিকে তাঁরা সীমান্ত এলাকা পৌঁছান। ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করার পর তাদের চিলাহাটি-হলদিবাড়ী সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গতকাল রোববার পঞ্চগড় জেলার ৩৬টি ছিটমহল থেকে প্রথম দফায় ৪৮ নাগরিক স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভারতে যান। চিলাহাটির ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে আবদুর রউফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে হলদিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তাঁরা। তাঁদের বিদায় জানান নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুজিবুর রহমান, বিজিবির ৫৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জি এম সারওয়ার। ভারতের কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আইশা রানী তাঁদের অভ্যর্থনা জানান।
গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের কর্তৃপক্ষ ছিটমহলগুলোতে যৌথ জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, অনেকে ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে দেশটিতে যেতে আগ্রহী। অন্যদিকে, অনেকেই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেয়।
এ বছরের ২৫ মে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত স্থলসীমান্ত চুক্তি সমর্থনের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি নামে খ্যাত চুক্তিটি ১৯৭৪ সালে সই হয়। ওই সময় ছিটমহল ও অমীমাংসিত ভূমিবিনিময়ে জাতীয় সংসদে চুক্তিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু তখনকার ভারতীয় সংসদ চুক্তিটির চূড়ান্ত অনুমোদন না দেওয়ায় তখন বাস্তবায়িত হয়নি। সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ভূমি বিরোধ থেকেই যায়।
সর্বশেষ ২০১১ সালে ইন্দিরা চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিং একটি প্রটোকল সই করেন। এর পর সম্প্রতি ভারতীয় পার্লামেন্ট চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেয়। ফলে চুক্তিটি বাস্তবায়নের পথ খুলে যায়।