মহেশপুরে পুলিশের গুলি, বিএনপির ভোট বর্জন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/04/01/photo-1459448525.jpg)
ঝিনাইদহের মহেশপুরের ১২টি ইউনিয়নের বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোট শেষ হয়েছে। চলছে গণনা। সকালের দিকে ভোটারদের মাঝে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ফিকে হয়ে আসে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে শ্যামকুড় ইউনিয়নের অনন্তপুর ভোটকেন্দ্রে পুলিশ গুলি করেছে। একদল দুর্বৃত্ত এ কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট বক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে আনসার ব্যাটিলিয়ানের সদস্য মকবুল হোসেনের কাছ থেকে একটি চাইনিজ রাইফেল ছিনতাই করার চেষ্টা চালায় হামলাকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ তিনটি শটগানের ফাঁকা গুলি করে।
এ সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোখলেচুর রহমানসহ দুজন। এ ঘটনার পরে কিছু সময় ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। হামলাকারীরা ওই কেন্দ্রের দুইটি বুথ ভাঙচুর করে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ এবং অনন্তপুর ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে হামলাকারীরা ব্যালট বক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গুলি ছুড়ে। এজন্য সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকলেও ফের ১২টার দিকে ভোটগ্রহণ করা হয়।
এদিকে সকাল ৯টার দিকে যাদবপুর ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দেওয়া এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করার ফলে ধানের শীষের সর্মথকরা ভোট দিতে পারেননি। যে কারণে ভোট বর্জন করতে বাধ্য হন তিনি।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে একই ইউনিয়নের দুই ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন। এ ছাড়া শ্যামকুড় ইউনিয়নের তালশার সরকারি প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্রে প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র ও বিএনপির চেয়ারম্যান।
তবে তালশার সরকারি প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এ ধরনের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন।
এ ছাড়া সকাল ১১টার দিকে কাজীর বেড় ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা থেকে জামায়াত নেতা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করার সময় একজনকে আটক করে পুলিশ।
সকালের দিকে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটারদের উপচে পড়া ভিড়। যা আগের নির্বাচনগুলোতে চোখে পড়েনি। সকাল ৮টার আগে থেকেই ভোটারদের লম্বা সারি। ফতেপুর ইউনিয়নের কেশচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার ও রাহেলা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে আসেন ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে । এ সময় তারা বলেন, ভোট দিতে পেরে খুশি।
তবে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশাফুর রহমান বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৫০ জন লড়াই করেছেন। সাধারণ সদস্য পদে ৩৯৭ এবং সংরক্ষিত নারী সাধারণ সদস্য পদে ১০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।