ঘরে ঢুকে পাহারা দেওয়া সম্ভব নয় : সিএমপি কমিশনার
চুরি করতে রাতে ব্যাংকের ভেতর ঢুকে চোর যদি ধরা পড়ার ভয়ে কাউকে জবাই করে ফেলে যায়-এ ধরনের পরিস্থিতিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি বলতে নারাজ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল। এ সময় তিনি আরো বলেন, ঘরে ঘরে গিয়ে কাউকে নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব না।
চট্টগ্রামে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মুরাদপুর শাখায় ডাকাতির চেষ্টা ও নিরাপত্তাকর্মীকে খুনের ঘটনায় দেশের কয়েকটি স্থান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে সিএমপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাদের হাজির করা হয়। এ সময় সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল এসব কথা বলেন। দুর্বৃত্তরা তাদের পেশার পরিবর্তন করছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান সিএমপি কমিশনার।
গত ৭ মে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের গ্রিল কেটে ডাকাতির চেষ্টাকালে দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের নৈশপ্রহরী মো. ইব্রাহিমকে গলা কেটে হত্যা করে। ডিবি পুলিশ এ ঘটনার পর দারোয়ানের চুরি হওয়া মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত মার্কেট থেকে গিয়াস উদ্দিন, নগরীর বাকলিয়া থেকে মাজহারুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা থেকে মাহাবুব এবং হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বিথাঙ্গল থেকে সাগরকে গ্রেপ্তার করে। আজ শনিবার ভোরে এ অভিযান শেষ হয়।urgentPhoto
ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল বলেন, ঘটনার এক মাস আগ থেকে তারা ব্যাংক ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়। পরিকল্পনা করে রাত আড়াইটায় ব্যাংকের পেছনে জানালার রড ভেঙে ব্যাংকে ডুকে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। ঘুমন্ত দারোয়ানকে খুন করে ডাকাতির ব্যর্থ চেষ্টা চালায় বলে জানান তিনি।
সিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা যেটা বললেন, আমি তো মনে করি না অবনতি হয়েছে। এটা কমপ্লিটলি আমাদের কন্ট্রোলে আছে। দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে এই দুটা। মনে হতে পারে যে জবাই করে মানুষ খুন করল ব্যাংকের মধ্যে। এখন রাতের অন্ধকারে ব্যাংকের মধ্যে চোর ঢুকে সে গেল চুরি করতে, সুযোগ পেলে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে জবাই করে দিল। এটা ঠিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আমি অবশ্যই বলি না। এবং আমরা এটা উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছি।’
এসব ঘটনায় দুর্বৃত্তদের সাহস বাড়ছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘না, এটা সাহসের প্রশ্ন না। পেশার পরিবর্তন হচ্ছে। তারা সাহসী হয়ে গেছে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নাই। কারণ বেশি সাহসী হয়ে তো লাভও নাই। চোর হয়ে গেল কিলার, সে ধরা পড়ে গেল। লাভ হলো কি?’
‘খুনের মধ্য দিয়ে একটা মানুষ তো চলে যায়’-সাংবাদিকরা এমন প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে আবদুল জলিল মণ্ডল বলেন, ‘ঘরের ভেতরে যদি আপনি বউকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন নিরাপত্তা কে দেবে? এই যে মেয়েটাকে ফেলল, সে সতিন।এক সতিন আরেক সতিনকে মেরে ফেলল। তার নিরাপত্তা কেমন করে দেব? এটা তো আমার পক্ষে সম্ভব না ঘরের ভেতর ঢুকে ঢুকে পাহারা দেওয়া। স্টিল দেন, আমি জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চাই এই জন্যেই যে, তাহলে দেখা যাবে সচেতন হলে মানুষ আর এই কাজগুলো করবে না। এটাই আমার মেইন উদ্দেশ্য।’ বলেন সিএমপি কমিশনার।