এক মাস কারাভোগ করে মুক্ত মেয়র জাহাঙ্গীর
এক মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। বিচারপ্রতিকে নিয়ে কটূক্তির মামলায় তিনি এ সাজা ভোগ করেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় কারাগার থেকে মুক্তিপান তিনি।
দিনাজপুর কারাগারের সুপার নুরশেদ আহমেদ ভুইয়া মেয়রের মুক্তির তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ১১টায় তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে দ্রুত চলে যান মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তিনি সবুজ রঙের টি-র্শাট ও ফিরোজা রঙের লুঙ্গি পরা ছিলেন।
টানা তিন বারের মেয়র বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে ১৮ অক্টোবর দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর গত ৩১ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগ তাঁকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
গত ৩ আগস্ট জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সমাবেশে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে চার আইনজীবী তা আপিল বিভাগের নজরে এনে আদালত অবমাননার আবেদন করেন।
আবেদনকারী চার আইনজীবী হলেন হারুন অর রশীদ, মাহফুজুর রহমান রোমান, মো. মনিরুজ্জামান রানা ও শফিক রায়হান শাওন।
এরপর ১৭ আগস্ট মেয়রকে তলব করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। ২৪ আগস্ট সকাল ৯টায় তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আদালত অবমাননার জন্য তাঁকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি ওই ভিডিও অপসারণ করতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ২৪ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম।
ওই দিন আদালত ১২ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন রেখে সকাল ৯টায় সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুসারে তিনি আদালতে হাজির হন।
১২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মেয়রকে এক মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও সাত দিনের কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া সাত দিনের মধ্যে তাঁকে দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।
সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম কারাগারে যাওয়ার আগে সেই এক লাখ টাকা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান গাওসুল আযম বিএনএসবি চক্ষু হাসাপাতালের ফান্ডে জমা দেন।