ক্ষমতার মেয়াদ বাড়াতে নির্বাচনের খেলা মঙ্গলজনক হবে না : মঈন খান
ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে এই যে নির্বাচন নির্বাচন খেলা, সেটির পরিণাম কখনোই জাতির জন্যে মঙ্গলজনক হতে পারে না- এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। গতকাল শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) রাতে এক বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘৩০শে নভেম্বর পরবর্তী রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে বাস্তবতাকে উন্মোচিত করতে গেলে যে কঠিন সত্যটি উল্লেখ করতে হয় তা হলো, সরকারি দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনটিকে তাদের নির্বাচনে বিজয়ের দিন বলে উল্লাস করছে। এটা যে তাদের জন্য কত বড় ভ্রান্তিবিলাস তা তারা আজ বুঝতে না পারলেও এ ভুলের জন্যে জনতার আদালতে আওয়ামী লীগকে আগামীতে যে বিশাল মূল্য দিতে হবে সেটা তারা আজ কল্পনাও করতে পারছে না। ক্ষমতার মোহে ও অর্থবিত্ত আহরণের লোভে অন্ধ হয়ে তারা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গিয়েছে, যা শুধু আওয়ামী লীগের জন্যে নয়, পুরো জাতির জন্যই অচিরে মারাত্মক এক পরিণতি ডেকে আনবে।’
ড. মঈন খান বলেন, ‘জনগণের ভোটাধিকারকে চিরতরে হরণ করার সরকারের এই যে কাণ্ডজ্ঞানহীন চিন্তাধারা যা বাংলাদেশেকে ৭ই জানুয়ারি একটি নির্বাচনী সার্কাসের দিকে ধাবিত করছে সেটা আজ শুধু দেশের ভেতরে নয়, বরঞ্চ সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মননশীল মানুষের সামনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি কলঙ্কময় ভাবচিত্র প্রতিস্থাপন করবে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস কিংবা আগ্রহ কোনোটাই নেই। এটা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট যে, নির্বাচনের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবার প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে কারণ নির্বাচনের ফলাফল ইতিমধ্যেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে, মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাবার প্রয়োজন বাংলাদেশে চিরতরে ফুরিয়ে গেছে। ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে এই যে নির্বাচন নির্বাচন খেলা, সেটির পরিণাম কখনোই জাতির জন্যে মঙ্গলজনক হতে পারে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘বিএনপি একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য, জনগণের ভোটাধিকার পুনর্বহালের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলন চলতেই থাকবে যতদিন না গণমানুষের এই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়। ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পাতানো নির্বাচনের তফসিল বর্জন করেছে। মার্কিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বও এই নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতার প্রশ্ন তুলেছে। তারা যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল, সরকার তা আমলেই নেয়নি। ফলশ্রুতিতে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ নির্বাচনে পর্যবেক্ষকও পাঠাচ্ছে না। কারণ তারা বুঝে গেছে, নির্বাচনের নামে এখানে কত বড় প্রহসন হতে যাচ্ছে।’
ড. মঈন খান বলেন, ‘মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এদেশে জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায়নি। এবারও যাবে না। সরকার মনে করেছে, আগের মতো এবারও একতরফা একটি নির্বাচন করে স্বাচ্ছন্দ্যে ক্ষমতায় থাকবে, সেটা হবার নয়, কেননা এখন ২০১৪ বা ২০১৮ সাল নয়।’