নারী চিকিৎসকের ওপর হামলা, আ.লীগনেতাসহ দুজন কারগারে
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় নুসরাত তারিন তন্নী নামে এক চিকিৎসকের ওপর হামলার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগনেতা জুলহাস মাদবরসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন নারী চিকিৎসক নুসরাত তারিন তন্নীর সঙ্গে কিছুদিন আগে একটি ওষুধ কোম্পানির প্রোমোশন অফিসার শহিদুল ইসলাম মৃধার ওষুধ লেখা নিয়ে ঝামেলা হয়। বিষয়টি তিনি তার মামা জুলহাস মাদবরকে জানান। তার জেরে গতকাল বুধবার রাতে ওই চিকিৎসক বাসায় ফেরার পথে নিজ বাড়ির কাছে হামলার শিকার হন। আওয়ামী লীগনেতা জুলহাস মাদবরসহ তাঁর ছেলে ডামুড্যা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি লিখন মাদবর, ওই ওষুধ কোম্পানির প্রোমোশন অফিসার শহিদুল ইসলাম মৃধা ও বেশ কয়েকজন লোক এ হামলা চালান। এ সময় ওই চিকিৎসকের চিৎকারে বাসা থেকে তাঁর মা মাসুমা খাতুন ও স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় আজ সকালে তন্নীর স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভুইয়া ডামুড্যা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন। পরে দুপুরে জুলহাস মাদবর ও শহিদুল ইসলাম মৃধাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
ডা. নুশরাত তারিন তন্নী বলেন, ‘আমি রাতে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে জুলহাস মাদবরের ডাকে আমি দাঁড়াই। তাঁর সঙ্গে শহিদুল ইসলাম মৃধাসহ আরও কয়েকজন ছিল। কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার ওপর হামলা করেন তাঁরা।’
মামলার বাদী তন্নীর স্বামী ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম (রাফি) বলেন, ‘শহিদুল ইসলাম মৃধার কোম্পানির ওষুধ না লেখায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্ত্রীর ওপর হামলা চালায়। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগনেতা জুলহাস মাদবরের মামাতো ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল হক ইমরান বলেন, আমার ভাই কারো উপরে হামলা চালাননি। চিকিৎসক ও তার মায়ের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।’
ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, ‘ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি শহীদ ও স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসক তন্বীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে তিনি ও তাঁর মা আহত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারত হোসেন বলেন, চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে তিনজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সেই মামলায় জুলহাস মাদবর ও শহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।