পাঁচশ টাকা ঘুষ নেওয়ায় রাঙামাটি বদলি!
মাত্র পাঁচশ টাকা ঘুষ নিয়ে ফেঁসে গেলেন অফিস সহায়ক লুতফর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরের ঝিনাইদহ ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ের ঘটে এই ঘটনা।
আজ দুপরে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান পরিচালনা করে দপ্তরটিতে। এ সময় ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে ধরা পড়েন লুতফর রহমান। শাস্তি হিসেবে রাঙামাটি জেলায় তৎক্ষণিক বদলি করা হয় তাকে। তবে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকলেন ড্রাগ সুপার!
খবর নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ঝিনাইদহ ড্রাগ সুপার কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঘুষ বাণিজ্যসহ সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে দুদকে অভিযোগ করা হয়। আজ দুপুর ১২টা থেকে ছদ্মবেশে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী পরিদর্শক (এআই) কাউছার আহম্মেদ ও এএসআই মহসীন হাসান ওই দপ্তরে ওষুধ ব্যবসায়ী সেজে অবস্থান নেন। বেলা অনুমান ১টার দিকে জেলা শহরের মেসার্স শাহীন হোমিও হলের মালিক সার্ফুজামান লাইসেন্স গ্রহণের জন্য সেখানে আসেন। এ সময় অভিযুক্ত অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) লুতফর রহমান ওই ব্যক্তির কাছে ঘুষ দাবি করেন। তখন পাঁচশত টাকা তাঁর হাতে তুলে দেন ওই ব্যবসায়ী। এ সময় ছদ্মবেশে থাকা দুদকের টিম টাকাসহ হাতেনাতে ধরে ফেলে তাঁকে।
এ সময় ড্রাগ সুপার নিজ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
খবর পেয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শফি উল্লাহ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাৎক্ষণিক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ড্রাগ সুপার সিরাজুম মনিরাকে অনুরোধ করেন। বেলা ৩টার দিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করে দুদক টিম নিজ কার্যালয়ে ফিরে আসে।
ড্রাগ সুপার সিরাজুম মনিরা অফিস সহায়কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন ডিজির (মহাপরিচালক ঔষধ প্রশাসন) নির্দেশে আজ বিকেলেই লৎফর রহমানকে রাঙামাটি জেলায় বদলি করা হয়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে তাকে।
অভিযুক্ত লুতফর রহমানের সঙ্গে প্রতিবেদকের সরাসরি কথা হয়েছে। তিনি বলেন, সময় নেই এখনই বাড়ি যেতে হবে। কারণ ১০ তারিখে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ড্রাগ সুপার পদে ঝিনাইদহে যোগদান করেন সিরাজুম মনিরা। ওই বছরের মাঝমাঝি সময় স্থানীয় নতুন হাটখোলাতে একটি ওষুধের দোকানে অভিযান পরিচালনার সময় জনতার রোষানলে পড়েন তিনি। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন।
অভিযোগ উঠেছে নতুন ড্রাগ লাইসেন্স করতে কিংবা নবায়ন করতে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করা হয়। লেনদেন ছাড়া ওই দপ্তরে লাইসেন্স পাওয়া কঠিন। দপ্তর কেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। চক্রটি নানা কৌশলে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অবশেষে আজ অফিস সহায়ক লুতফর রহমান মাত্র পাঁচশ টাকা ঘুষ নিয়ে ফেঁসে গেলেন!