আমরা নারীদের সমান সুযোগ দিতে চাই : প্রধানমন্ত্রী
আমরা নারীদের সমান সুযোগ দিতে চাই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি নারীদের যেখানে যাকে কাজের সুযোগ দিয়েছি তারা কিন্তু সেখানে ভালো করছে। শুধু দেশের ভেতরেই না আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের নারীদের সমান পদচারণা হোক, সেটাই আমি প্রমাণ করতে চাই। কাজেই সব দিক থেকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মেয়েদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরকে ঘরে বসে থাকলে চলবে না।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, মেয়েরা শুধু বাইরেই কাজ করে না, তারা কিন্তু ঘরে এসেও কাজ করে। সেটা কিন্তু হিসেবে ধরা হয় না। আমাদের পুরুষরা যদি নারীদের দিকে একটু বেশি নজর দেয়, তাহলে তাদের জীবন আরও বেশি সুন্দর হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ডাকে এ দেশের মানুষ অস্ত্র কাঁধে নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছে। পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের কিছু দেশীয় দালাল, তারা নারীদের ধরে নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে তুলে দিত। তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চলতো। দিনের পর দিন তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন হয়। সে নির্যাতিত মা-বোনদের আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, নির্যাতিত নারীদের স্বাধীনতার পর উদ্ধার করা হয়। নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনের জন্য জাতির পিতা শেখ মুজিব পুনর্বাসন বোর্ড করে দেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তার, নার্স নিয়ে আসেন তাদের চিকিৎসা করাতে। কারণ, অনেকে তখন অন্তঃসত্ত্বা, অনেকের অবস্থা খারাপ ছিল। শারীরিক মানসিকভাবে তাদের চিকিৎসা এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেন। আমার মা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক মেয়েকে বিয়ে দেন। এক সাথে অনেকের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেন। যারা বিয়ে করেন তাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা নাম দিয়ে তাদের সম্মাননা দিয়েছেন। আমরা তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছি, তাদের অবদান ভোলার নয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে জয়িতা সম্মাননা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মাননাপ্রাপ্ত নারীরা হলেন— ময়মনসিংহের আনার কলি, রাজশাহীর কল্যাণী মিনজি, সিলেটের চা শ্রমিক কমলী রবিদাশ, বরগুনার জাহানারা বেগম ও খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।