তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন, সাতজনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের মামলায় কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন এবং সাতজনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ১২ মার্চ এ মামলায় যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিন রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম রায় ঘোষণার জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ। অপর আসামিরা হলেন—টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিযা, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার। বাকি আসামিরা হলেন—সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন বা রূপসী বাংলা শাখার সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম অফিসের জিএম ননীগোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ডিএমডি মাইনুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন ও সফিজউদ্দিন এবং এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান।
আসামিদের মধ্যে জামাল উদ্দিন সরকার, আলতাফ হোসেন জামিনে রয়েছেন। এছা ড়া সাইফুল, মতিন, হুমায়ুন, ননীগোপাল নাথ, তসলিম, সাইফুল, মেরী ও জাকারিয়া পলাতক রয়েছেন।
এর আগে ২৮ জানুয়ারি রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। রায় ঘোষণার দিন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন-পূর্বক দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত দুদকের আবেদনটি মঞ্জুর করেন। এরপর আদালত মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। ৪ মার্চ তৎকালীন ঢাকার দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান ও কেশব রায় চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্য শেষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত।
জানা যায়, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস নামে ভুয়া কোম্পানির হিসাবে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রপ্তানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভীর ও তার স্ত্রী তুলে নেন। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করে দুদক।
২০১৬ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলির আদেশ দেন।