রাবেয়া হাসপাতালে ফের ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/03/28/jhenaidah_pic.jpg)
ঝিনাইদহের রাবেয়া হাসপাতালে ফের ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভোরে যশোরে ইবনে সিনা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
শৈলকুপা উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের আল-আমিন গত ২৫ মার্চ সকালে তাঁর স্ত্রী শারমিন খাতুনকে (২৩) ঝিনাইদহ জেলা শহরের আরাপপুর এলাকার রাবেয়া হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। সিজারিয়ান অপারেশনে দ্বিতীয় সন্তানে মা হন তিনি। অপারেশন থিয়েটার থেকে বেডে দেওয়ার পরই রক্তক্ষরণ শুরু হয় তাঁর। ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাই আবারও নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। কয়েক ঘণ্টা ধরে আরেক দফায় অপারেশন করা হয়। জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয় তাঁর। ১৯ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরও কোনো উন্নতি হয়নি। পাঠিয়ে দেওয়া হয় যশোরের বেসরকারি ইবনে সিনা হাসপাতালে। সেখানে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া তাঁকে।
আজ ভোরের দিকে ওই হাসপাতালের ডাক্তার শারমিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আইসিইউতে মরদেহ নিয়ে শুরু হয় দরকষাকষি। বিল প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বজনরা জানায়, মামলা মোকদ্দমা না করলে বিল পরিশোধ করে দেবে রাবেয়া হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারের মালিক। শাসক দলের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জনৈক নেতার পীড়াপীড়িতে রাজি হন শারমিনের স্বামী। যশোর থেকে দুপুরে মরদেহ নিয়ে নিজ গ্রাম মীর্জাপুরে ফিরে আসেন তিনি। বিকেলে গ্রামের কবরস্থানে দাফন হয় শারমিনের মরদেহ।
এ বিষয়ে কথা হয় রাবেয়া হাসপাতালের মালিক সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি স্বীকার করেন সিজারিয়ান অপারেশনের পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। রক্ত বন্ধ না হওয়ায় আরেক দফায় অপারেশন করা হয় তাঁকে। একপর্যায়ে যশোরের ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
ক্লিনিক মালিক আরও জানান আইসিইউ বিল এক লাখ ৭০ হাজার পরিশোধ করা হয়েছে। অন্যান্য খরচসহ সর্ব মোট দুই লাখ টাকায় ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়েছে। এখন কোনো ঝামেলা নেই।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিথিলা ইসলামের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন তিনি। তিনি জানান, সিজার করার কিছু সময় পর রক্তক্ষরণ শুরু হলে দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করে ওই রুগীর জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয়। এর পরও রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। জানতে পেরেছি ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেও এখনও অভিযোগ করেনি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায় বেসরকারি ওই হাসপাতালে এর আগে ভুয়া ডাক্তার ধরা পড়েছে। ভুল অপারেশন ও অপচিকিৎসার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক মা-শিশু।