ভারত থেকে চার দিনে ফিরল ২১ হাজার পর্যটক
ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফিরতে শুরু করেছে বাংলাদেশি পর্যটকরা। এতে বন্দরে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে তারা ভারতে গিয়েছিল।
গত ১৬ এপ্রিল থেকে আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৫টা পর্যন্ত চার দিনে ২১ হাজারের অধিক পর্যটক দেশে ফিরেছে। এর মধ্যে ১৬ এপ্রিল চার হাজার ৯১০ জন, ১৭ এপ্রিল পাঁচ হাজার ৩৬৩ জন, ১৮ এপ্রিল পাঁচ হাজার ১৪৯ জন এবং আজ শুক্রবার পাঁচ হাজার ৫৯০ বাংলাদেশি দেশে ফিরে।
এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। টানা পাঁচ দিন বন্ধ ছিল দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছিল। এতে লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকে গিয়েছিল ভারতে। তাই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে বেনাপোল বন্দরে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় বন্দরে কাজ করছে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরের নিরাপত্তাকর্মীরা।
ভারত থেকে ফিরে আসা মামুন বিশ্বাস জানান, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন। ভারতের পেট্রোপোলে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে পর্যাপ্ত ডেস্ক থাকলেও অফিসার কম থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ভারত ফেরত মোজাহার হোসেন বলেন, এবার টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে বেড়ানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে ভারত গিয়েছিলাম। ছুটি শেষ হওয়ায় দেশে ফিরতে হয়েছে। তবে আজ ফিরে আসার সময় বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ডেস্কের পরিমাণ বেশি থাকলে ও অফিসার বসেন মাত্র তিনজন। কাজও করেন ধীরগতিতে।
এদিকে ভারতফেরত বেশিরভাগ পর্যটক অভিযোগ করেন, দূরপাল্লার বাসে সিট সংকটের কথা বলে ভাড়া বেশি আদায় করছে পরিবহণ কাউন্টারগুলো। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহণ ভেদে জনপ্রতি ননএসি ৫৫০ থেকে ৭৫০ টাকা আর এসি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা হলেও এখন চাইছে নন এসি ৮০০ টাকা ও এসি এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা। ফেরার পথে পকেটে টাকা কম থাকায় কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে তাঁদের।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে। ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ১৪০ কোটি টাকা আয় হয়। সে হিসাবে সেবার মান একেবারে বাড়েনি।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ঈদের ছুটিতে গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে যায়। ছুটি শেষ হওয়ায় ভারতফেরত পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। পর্যটকরা যাতে পাসপোর্টের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে পারেন সেজন্য বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) থেকে আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২১ হাজারের অধিক বাংলাদেশি পর্যটক দেশে ফিরেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় মানুষ ঘুরতে ও চিকিৎসার জন্য ভারত যায়। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে দ্রুত পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে ডেস্ক অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।