স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি ‘পবা’র
স্বাস্থ্যসেবা খাতে নানা প্রতিষ্ঠান ও পরিধি বৃদ্ধি পেলেও আইন, নীতিমালার সংস্কার ও উন্নয়ন সে অনুসারে হয়নি। আইনের দুর্বলতার কারণে মানসম্মত আর মানহীনদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনটি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)।
আজ রোববার (২৫ মে) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পবার নির্বাহী সভাপতি ডা. লেলিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. ফিরোজ খান, পাভেল পার্থ প্রমুখ।
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সঙ্গে প্রায় ৪৫টি আইন জড়িত। কিন্তু এখন এসব আইনের কার্যকারিতা নেই। এ ছাড়া ভোক্তা অধিকার আইন, দণ্ডবিধিতে কতিপয় ধারায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার কিছু বিধান রয়েছে। এ আইনগুলোর কোনটিই পুর্ণাঙ্গ নয় এবং বর্তমানে বাংলাদেশের বিশাল স্বাস্থ্য খাত ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যাপ্ত নয়। আর এ বাস্তবতায় স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য সেবা গ্রহীতার সুরক্ষা প্রদান এবং প্রতিষ্ঠানসমূহের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করা জরুরি।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত আইনের শুরুতে ‘অপরাধী’ সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যা নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়। আইনের খসড়ায় ‘অবহেলা’ সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চিকিৎসা অবহেলার বিষয়গুলো এ সংজ্ঞায় যুক্ত করা হয়নি।
পবার পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার খসড়া আইনে পাবলিক হাসপাতাল স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার পৃথক সংজ্ঞা ও সুনির্দিষ্ট করার পাশাপাশি সরকার যাতে প্রয়োজনে পাবলিক হাসপাতালকে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে তার ব্যবস্থা রাখা, রোগীর সুরক্ষায় ও চিকিৎসা অবহেলা নিরূপনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্যসেবায় খাদ্য, ওষুধ মালামাল, উপকরণ সরবরাহকারীর দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা, চিকিৎসা ব্যয় কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা, চিকিৎসা ব্যয় কমাতে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম যুক্ত করা, স্বাস্থ্য সেবার মান ও যথার্থতা পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন, রেফারেল ইত্যাদি বিধান যুক্ত করা, ডিজিটাল রেজিস্টার ব্যবস্থার বিধান রাখা, জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত অভিযোগ প্রদানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কমিটি গঠন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রশাসনিক জরিমানা প্রদানের ব্যবস্থা রাখা, পরিবেশ আদালত-ঔষধ আদালতের মতো স্বাস্থ্যসেবা আদালত গঠন এবং সাধারণ নাগরিকদের সহজে অভিযোগ ও মামলা করার ক্ষমতা প্রদান করার সুপারিশ করা হয়।