রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পাশে থাকবে চীন, বেসরকারি বাণিজ্যিক খাতে ১৬ সমঝোতা
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে চীন সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবে। আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চাইনিজ পিপল'স পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং এই আশ্বাস দেন। এই সফরে বেসরকারি বাণিজ্যিক খাতে ১৬টি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর চলমান চীন সফর নিয়ে আজ সন্ধ্যায় বেইজিংয়ের সেন্ট রেজিস হোটেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ রাতে একথা জানানো হয়।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সিপিপিসিসির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যানের অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে এ বৈঠকে আওয়ামী লীগ এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করেন তারা। দলীয় নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক সফরের বিষয়েও ঐক্যমত হয়। ওয়াং হুনিং বলেন, চীনের কম্যুনিস্ট পার্টি এবং আওয়ামী লীগ উভয়েরই অভিন্ন লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ।
এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং নিবাস সেন্ট রেজিস হোটেলের পার্লার রুমে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সৌজন্য সাক্ষাতের ওপর আলোকপাতের সময় হাছান মাহমুদ জানান, প্রধানমন্ত্রী এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। এআইআইবির প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়য়ন-অগ্রগতিকে অভূতপূর্ব বলে বর্ণনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিংয়ের সাংগ্রিলা সার্কেলে সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না সম্মেলনে যোগদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও চীনের শতাধিক ব্যবসায়ী এ সম্মেলনে যোগ দেন এবং বাংলাদেশ ও চীনের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সন্ধ্যায় বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, আমাদের ওষুধ বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে, চীনেও আমরা এটি প্রসারিত করতে চাই। পাশাপাশি পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, আম প্রভৃতি চীনে রপ্তানির উদ্যোগের মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সব অনুষ্ঠান অপরিবর্তিত রয়েছে। শুধু ১১ তারিখ সকালের পরিবর্তে ১০ জুলাই রাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হলে চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ও দুদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। এরপর প্রায় ২০ থেকে ২২টির মতো সমঝোতা স্মারক সই এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণার কথা রয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী তার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।