সিরাজদিখান থানা ভাঙচুর মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/10/01/munshiganj_news_pic.jpg)
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় হামলা চালিয়া ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হয়।
সিরাজদিখান আমলি আদালত-২ এর বিচারক মুহসিনা হোসেন টুষি তিন দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়ে চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমানকে কারাগারে পাঠান। এর আগে গতকাল সোমবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমানকে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজানগর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর গ্রামের মৃত মানিক ব্যাপারীর ছেলে এবং নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরে উত্তেজিত কয়েশ মানুষ ওই দিন বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সিরাজদিখান থানার ফটকের সামনে জড়ো হয়ে থানা ঘেরাও করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা থানার ফটকের সামনে অগ্নিসংযোগ করে। একপর্যায়ে থানার প্রধান গেট ভাঙচুর করে থানার ভিতরে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে এবং পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে থানার ভিতরে প্রবেশ করে পুলিশের উপর আক্রমণের প্রস্তুতি নিলে সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। বিকেল পৌনে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থানার ফটকে জড়ো হয়ে মোট তিন দফা হামলার প্রস্তুতি নিলে তিন দফাই সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় মো. শান্ত (৩০), শামীম (৩০) ও আশিক (৩০) নামে তিনজন পুলিশের ছোড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর রক্তাক্ত আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ২৭ আগস্ট সিরাজদিখান থানার এসআই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৪৫০ দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে মোট ১৩টি ধারায় একটি মামলা করেন। যার নং-১৬। মামলার এজাহারে থানা ফটকে অগ্নি সংযোগ ও থানার প্রধান গেট ভাঙচুর করে উচ্ছৃঙ্খল দুষ্কৃতিকারীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, থানার ফটক ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র ও গুলি ছিনতাইয়ের চেষ্টাসহ পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, কিল-ঘুষি, লাথি মেরে নীলা ফুলা জখম করে। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে শর্টগানের ৯২টি সিসা কার্তুজ এবং ১১২ রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের গুলিসহ মামলার জব্দ করা একটি ইয়ামাহা মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর সিরাজদিখান থানায় হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হয়।
এ ব্যাপারে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ মিজানুর ইসলাম আসামির রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করে তিন দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আদালতের বেঞ্চ সহকারীর কাছ থেকে তথ্য নিন। আমি কোনো বক্তব্য দিব না। এসপি স্যারের নিষেধ আছে।’