পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জালিয়াতির মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির অভিযোগে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেন সংস্থার উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।
আসামিরা হলেন—সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের সাবেক পরিচালক মো. ফজলুল হক, সাবেক পরিচালক মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম, পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের টেকনিক্যাল ম্যানেজার সাহেনা হক।
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, বেনজীর আহমেদ পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি, অতিরিক্ত আইজিপির পদমর্যাদায় র্যাবের মহাপরিচালক ও ডিএমপি কমিশনার পদে দায়িত্ব পালনের সময় পাসপোর্টের আবেদনপত্রের প্রফেশনের জায়গায় সরকারি চাকরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও জাল জালিয়াতি-প্রতারণার আশ্রয় নেন। তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রাইভেট সার্ভিস উল্লেখ করে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় অনাপত্তিপত্র (এনওসি) ছাড়া মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও ই-পাসপোর্টের (ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট) জন্য আবেদন করেন।
অন্যান্য আসামিরা বেনজীর আহমেদের দাপ্তরিক পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞাত থেকেও বিভাগীয় অনাপত্তি সনদ (এনওসি) সংগ্রহ ও যাচাই না করে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ করেছেন। আসামিরা বেনজীর আহমেদের নামে সাধারণ পাসপোর্ট, ই-পাসপোর্ট (ইলেক্ট্রনিক্স পাসপোর্ট) ইস্যুর জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট অর্ডার ১৯৭৩ এর ১১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বসনিয়াতে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০০২ সালের জুলাই থেকে ২০০৩ সালের জুন পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় কসোভোতে কর্মরত ছিলেন। তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চিফ অব মিশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সেকশনে (পি-ফাইভ/ভি) ২০০৮ সালের ২ মে থেকে ২০০৯ সালের ১০ মে পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি ডিএমপি কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং র্যাবের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে আইজিপি পদে যোগদান করেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।