রোগী সেজে হাসপাতালে দুদক টিম, বহির্বিভাগে পেলেন না ডাক্তার
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পেয়ে রোগী সেজে হাসপাতাল পরিদর্শনে এলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর টিম। এসে দেখলেন বহির্বিভাগে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। এমনকি টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা আদায় হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে এমন আটটি অনিয়মের প্রমাণ পেলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর আভিযানিক দল। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে।
অভিযানের শুরুতে রোগী সেজে গোপনে হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের ভিডিও ধারণসহ তথ্য সংগ্রহ করে দুদক টিম। পরে বহির্বিভাগ ও টিকিট কাউন্টারসহ বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। অভিযানে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা আদায়, বহিঃবিভাগে অধিকাংশ ডাক্তার ও কর্মচারী অনুপস্থিত, স্টোরে কম্বল থাকা সত্ত্বেও রোগীদেরকে না দেওয়া, সার্টিফিকেট বাণিজ্যে হাসপাতালটির চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সোহেল শেখ ও কুদ্দুস গাজীর একটি সিন্ডিকেটের সন্ধানসহ ৮টি অনিয়মের প্রমাণ পায় আভিযানিক দলটি।
দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক। আর অধিকতর অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা। এ সময় দুদকের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, মো. সোহরাব হোসেন সোহেল, উপসহকারী পরিচালক আফসার উদ্দিন, মো. আল-আমিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার জীবিতেষ বিশ্বাস হাসপাতালে বিভিন্ন মেশিন অকেজো থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মেশিনগুলো সচল করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও এ বিষয়ে কোন সাহায্য আমরা পাইনি। ৮০ ভাগ ডাক্তার অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ডাক্তাররা রাউন্ডের পরেই সাধারণত রোগী দেখতে বসেন। আসলে দুই একজন ডাক্তারকে আমরা দেখতে পাইনি। টিকিটে অতিরিক্ত টাকা কেন নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়ে যে সকল অভিযোগ হয়েছে এ অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে আমরা অবশ্যই ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকশন নিব।
দুর্নীতি দমন কমিশনের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সে প্রেক্ষিতে আমরা সরেজমিনে হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। সকাল নয়টার পরে আউটডোরে ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও কয়েকজন ছাড়া অন্যান্যদের পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।