আকিজ কারখানায় নিহতদের চাঁদপুরের বাড়িতে মাতম
হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত চাঁদপুরের তিন শ্রমিকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পুরো পরিবার।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তাঁর ভাগনে মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ।
আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, পরিবারটা যার মাধ্যমে চলে, তিনি এখন নেই। আমার সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে।
হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্জারের কারখানায় প্রায় ৩০ বছর ধরে শ্রমিকের কাজ করছিলেন মো. ইব্রাহিম খান। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যান তিনি। শুধু তিনি নন এ ঘটনায় নিহত হন তাঁর আরও দুই নিকটাত্মীয়। তারা হলেন মোহাম্মদ মিজান ও মাহফুজ। আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন তাঁর বড় ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি।
আকিজ ভেঞ্জারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তিনজনের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা। কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের।
নিহত ইব্রাহিমের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তাঁরাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। ইব্রাহীম কাকা দুই বছর ধরে একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তাঁর এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে তাঁদের সংসারগুলোর পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভবত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।