নওগাঁয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

নওগাঁয় লক্ষ্মী রানী শীল (৫৫) নামে এক নারীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নগেন্দ্রনাথ দেবনাথ (৫০) নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি শহরের চকপ্রসাদ উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী লক্ষ্মী রানী শহরের হাট নওগাঁ মহল্লার বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ করেন, আট বছর আগে তার ছেলে-মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতে আসতেন নগেন্দ্রনাথ দেবনাথ। ওই সময় চাকরিতে টাকার বিশেষ প্রয়োজন বলে দুই দফায় পাঁচ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা নেন তিনি। নগেন্দ্রনাথের নিজস্ব একটি সমবায় সমিতি ছিল। ওই সমিতির মাধ্যমে এই টাকার কিছু লভ্যাংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শিক্ষক নগেন্দ্রনাথ দেবনাথ। তবে টাকা হাতে পাওয়ার এক মাস না পেরোতেই তিনি নানান টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি হঠাৎ নওগাঁ থেকে উধাও হয়ে যায়। প্রায় দেড় বছর পর নওগাঁয় ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু তিনি (শিক্ষক) টাকা ফেরত না দেওয়ায় নিরুপায় হয়ে স্থানীয়দের পরামর্শে থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
লক্ষ্মী রানী শীল বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সের শেষ সম্বল ছিল ওই টাকা। স্বামী এখন চলাচলে অক্ষম। এই টাকা ফেরত না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না। অভাব-অনটনের কারণে আরেকটি সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে মেয়ের বিয়ে দিতে হয়েছে। শিক্ষক পরিচয়ে নগেন্দ্রনাথ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। টাকা ফেরত চাওয়ায় সাংবাদিক ও সন্ত্রাসী পরিচয়ে বিভিন্নজনকে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক নগেন্দ্রনাথ দেবনাথ বলেন, ‘২০১৭ সালে লক্ষী দিদির থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়েছিলাম। শর্ত অনুযায়ী অনেক টাকা লভ্যাংশ দিয়েছি। পরে ঋণগ্রস্ত হয়ে নওগাঁ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। যেহেতু অনেক টাকা লভ্যাংশ দিয়েছি, তাই বাকি টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। লক্ষী দিদির অভিযোগগুলো সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই টাকা পাবে তার কাছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, নগেন্দ্রনাথ দেবনাথ নামের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিনটি চেক ডিজঅনার মামলা রয়েছে। সম্প্রতি একজন নারীর (লক্ষ্মী রানী) কাছ থেকে তিনি পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আর ফেরত দেননি। এ ঘটনায় সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নারী। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।