সাবেক এমপির বাসা দখলে নিয়ে ‘মানসিক ভারসাম্যহীনদের আশ্রম’

টাঙ্গাইলের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের বাসা দখলে নিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের রাখা হয়েছে।
আজ শনিবার (৮ মার্চ) সকালে শহরের ছোট কালীবাড়ি রোডের ছয়তলা ভবনটির তালা ভেঙে প্রতিবন্ধীদের ঢোকানো হয়।
আশ্রম গড়ে তোলার জন্য ভবনটির দখলে নেন মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক তরুণী। তিনি নিজেকে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন।
মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি জানান, আওয়ামী নেতার বাড়িতে আশ্রম গড়ে তোলার বিষয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। সেখানে অনেকেই মত দিয়েছে, বাড়িটি ভেঙে ফেলার চাইতে প্রতিবন্ধীদের জন্য আশ্রম তৈরি করা ভালো হবে। এজন্য তিনি সমাজের কল্যাণে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন।
মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি আরও বলেন, আজকে মানসিক প্রতিবন্ধীদের এখানে রাখার জন্য নিয়ে এসেছি। আশ্রমটির দায়িত্বে আপাতত আমি নিজেই রয়েছি। কোনো ব্যক্তির বাড়ি দখল করা যায় কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে তো আমি ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করিনি। এখানে সমাজের গরিব, অসহায়, প্রতিবন্ধী- যাদের দেখার কেউ নেই তারা রাস্তায় না থেকে আওয়ামী লীগ নেতার পরিত্যক্ত বাড়িতে থাকল। সারা জীবন মানুষের ওপর জোরদখল করে তারা অবৈধ এই প্রাসাদ বানিয়েছে, এর ভাগীদার এই অসহায় মানুষগুলোই।
এদিকে আবাসিক এলাকার মানসিক ভারসাম্যহীনদের আশ্রম করায় বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয়দের কেউ কেউ।
মাজেদুর রহমান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এটা সম্পূর্ণ আবাসিক এলাকা। এখানে এভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের থাকার বিষয়টি কেমন যেন দেখায়। অনেকেই সহজভাবে মেনে নিবে কি-না, তা বলা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, মিষ্টি আপুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি আমার সহযোদ্ধারাও অবগত নয়। তার কর্মকাণ্ডের প্রতি আমার কোনো ধরনের সমর্থন নেই।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদ জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে বিষয়টি আমি শুনেছি। কেউ অভিযোগ করলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর থেকে জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের পলাতক রয়েছেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তার বাসায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এরপর থেকে ভবনটিতে তালা দেওয়া ছিল।