চুরির অভিযোগে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, দোকান মালিক আটক

বরিশালের বাবুগঞ্জে দোকান থেকে লোহার পাত চুরির অভিযোগে মিঠুন (২০) ও লিংকন (২৩) নামে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে প্রকাশ্যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আজ রোববার (১৬ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রোববার বিকেলে নির্যাতনে অভিযুক্তদের একজন দোকান মালিক মো. হাসানকে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার দুই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন শিকদার।
নির্যাতনের শিকার দুই যুবক হলেন—বাবুগঞ্জ উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামের বাসিন্দা মিঠুন (২০) ও একই গ্রামের লিংকন (২৩)। আটক দোকান মালিক হাসান রহমতপুর ব্রিজ এলাকার সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং নামের দোকানের মালিক এবং উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামের বাসিন্দা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সূত্র ধরে জানা যায়, শনিবার দিনগত রাতে রহমতপুর ব্রিজের উত্তর পার্শ্বের ঢালে সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি দোকান থেকে বেশ কিছু লোহার পাত চুরি হয়। সকালে দোকানমালিক হাসান এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পাশের ভাঙারি ব্যবসায়ী সাইদুল চোরাই লোহার পাত কিনেছে। পরে সাইদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মিঠুন ও লিংকনকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন দোকান মালিক হাসান ও স্থানীয় কিছু লোকজন। ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে উপুড় করে হাত-পা বেঁধে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর পেছনে ঘুরে ঘুরে তার পায়ে লোহার রড দিয়ে পেটাচ্ছেন দোকান মালিক হাসান। অপর যুবককে মারধর করে পাশেই একটি বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। দোকান মালিকের সঙ্গে এক নারী এবং স্থানীয় আরও কয়েকজন ব্যক্তি দুই যুবককে মারধরসহ নির্যাতনে সহযোগিতা করছে। উৎসুক জনতা চারপাশে দাঁড়িয়ে তা উপভোগ করছে।
এ প্রসঙ্গে দোকান মালিক মো. হাসান বলেন, আমার দোকানের মালামাল চুরি করে পাশের ভাঙারি দোকানে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। ভাঙারি দোকান মালিক এবং অভিযুক্ত দুই যুবকও চুরির কথা স্বীকার করেছে।
পুলিশে না দিয়ে কেন নির্মম নির্যাতন করা হলো—এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি হাসান।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই যুবককে ছেড়ে দিয়েছে। চুরি করা যেমন অপরাধ, চোর ধরে আইনের হাতে তুলে না দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা আরেকটি অপরাধ। এ কারণে বিকেলে অভিযুক্ত দোকান মালিককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।