বান্দরবানে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের ডাকা হরতাল প্রত্যাহার

প্রশাসনের আশ্বাসে বান্দরবান জেলায় বাজারফান্ডের লিজের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ডাকা সোমবারের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে (১২ অক্টোবর) জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত জরুরি মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবু তালেবের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম হাসান, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান, জেলা নাগরিক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন, যুগ্ম সম্পাদক শাহজালাল রানা, গণমাধ্যমকর্মী মিনারুল হক, আলাউদ্দীন শাহরিয়ার, এইচ এম সম্রাট, মোজাম্মেল হক লিটন প্রমুখ।
সভা শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আট দফা দাবিতে সোমবার (১৩ অক্টোবর) জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় জনস্বার্থে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। এ মাসের মধ্যেই প্রশাসন, নাগরিক পরিষদ এবং স্থানীয় ভুক্তভোগীদের নিয়ে যৌথ সভার মাধ্যমে দাবি পূরণের ধাপগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে। প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে তাদের পক্ষে স্থানীয়ভাবে দাবি পূরণ করার ধাপগুলো দ্রুত পূরণ করবে এবং মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জোরালোভাবে লিখবে। দাবি পূরণ না হলে আবারও হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবু তালেব বলেন, হরতাল কর্মসূচি জনবান্ধন নয়, দাবি পূরণে প্রশাসনের আশ্বাসে কঠোর কর্মসূচি থেকে নাগরিক পরিষদ সরে আসায় তাদের সাধুবাদ জানাই। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় দাবি-দাওয়া নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করে জনস্বার্থে যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত পূরণে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
নাগরিক পরিষদের আট দফা দাবি হলো ব্রিটিশ রচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল, জমি ক্রয়-বিক্রয়, চাকরি, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে রাজার সনদ বাতিল, তিন পার্বত্য জেলায় জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু, বাজারফান্ড প্লটের লিজের মেয়াদ-৯৯ বছরে উন্নীত করা ও বন্ধ রাখা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা, উন্নয়নের স্বার্থে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তিন পার্বত্য জেলায় পরিবেশ বান্ধব ইটের ভাটাসহ কলকারখানা চালু করা, আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তিন পার্বত্য জেলায় প্রত্যাহার করা ২৪৬টি সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণ বন্ধ এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা; শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, চাকরিসহ সব ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সমান অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।