জুলাই ফাউন্ডেশনের ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্তের নির্দেশ

ভুয়া তথ্য দিয়ে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি তালিকায় নাম দেওয়া এবং যাচাইয়ের সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনায় জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন। বিচারক এদিন মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. জাকির হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাকির হোসাইন বলেন, এ মামলায় আসামি করা হয়েছে—জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন, কর্মকর্তা সাগর, মেহেদী হাসান প্রিন্স, আফজালুর রহমান সায়েম, সাইদুর রহমান শাহিদ, ফাতেমা আফরিন পায়েল, রেজা তানভীর, আলিফ, জাহিদ, এক্সিকিউটিভ মেম্বার সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী, সোনিয়া আক্তার লুবনা, শামীম রেজা খান ও রাকিন।
বাদী সাবিনা ইয়াসমিন মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার স্বামী ও সন্তানরা গত ১৯ জুলাই চিটাগং রোড এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন। ওই দিন তার স্বামীর হাঁটুর নিচে গুরুতর আঘাত লাগে এবং ছেলের পা ভেঙে রগ ছিঁড়ে গেছে। বিগত সরকারের পতনের পর জুলাই যোদ্ধাদের মূল্যায়নের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। চলতি বছরের ২০ মার্চ বেলা ১১টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংলগ্ন কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিসে গেলে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন ও অন্যান্য আসামি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা বাদী সাবিনা ইয়াসমিনের স্বামী ও ছেলে কীভাবে আহত হন জানতে চান। পরে বাদীর স্বজনরা আহত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন। এরপর ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের ছেলে সেখান থেকে এক লাখ টাকার চেক নিয়ে গেছে। বাদীর স্বামী বুলবুল জুলাই যোদ্ধা গেজেট নম্বর এবং মেডিকেল কেস আইডি দেখালে ইফতেখার তখন সাগর ও মেহেদীকে ডেকে আনে। তারা সাবিনা ইয়াসমিনকে বসিয়ে রেখে তার স্বামী বুলবুলকে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। কয়েক ঘণ্টা পার হয়ে গেলে স্বামীকে না পেয়ে ফোন দেন সাবিনা। সাগর ফোন রিসিভ করে বলেন, ভুয়া যোদ্ধাকে জামাই আদর চলতেছে। সাগর সাবিনাকেও ভেতরে যেতে বলেন। এরপর তারা বাদীকেও মারধর করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিরা তাদের ‘ভুয়া জুলাই যোদ্ধা’ উল্লেখ করে হুমকি দেন, জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন এবং ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন। নির্যাতনের ফলে বাদীর স্বামী বুলবুল মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকেন। পরবর্তীতে তিনি কিছুটা সুস্থ হলে আদালতে এই মামলা করা হয়।