নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় মানতে হবে যে ৭ নিয়ম

আসন্ন নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় এবারই প্রথমবারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কঠোর শৃঙ্খলার আওতায় আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রযুক্তি ও প্রচারের ধরন পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অপপ্রচার ও ভুল তথ্য বন্ধে নির্বাচনি আচরণবিধিতে এই প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য সাতটি নতুন নিয়ম যুক্ত করেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি।
ইসি মনে করছে, বর্তমান সময়ে নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি বড় প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। তাই এই মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নির্বাচনি পরিবেশকে আরও সুস্থ ও সুষ্ঠু রাখতে এই নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারে যে সাতটি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, তা নিম্নরূপ :
১. তথ্য জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক : প্রার্থী, তার নির্বাচনি এজেন্ট বা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ফেসবুক বা অন্যান্য যেসব প্ল্যাটফর্মে প্রচার চালাবেন, সেগুলোর নাম, আইডি, ই-মেইল ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে।
২. এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার নিষিদ্ধ : নির্বাচনি প্রচারে কোনোভাবেই অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে না।
৩. ভুয়া কনটেন্ট ও ঘৃণা ছড়ানো নিষেধ : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানো, ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো, কারও ছবি বিকৃতি করা বা ভুয়া কনটেন্ট তৈরি ও প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
৪. ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক ভাষা বর্জন : প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নারী, সংখ্যালঘু বা কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো রকম ঘৃণামূলক, উসকানিমূলক, কিংবা ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
৫. ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতি ব্যবহার নিষিদ্ধ : ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতিকে ব্যবহার করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা যাবে না। নির্বাচনি স্বার্থে ধর্ম বা জাতির অপব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৬. তথ্য যাচাই করা বাধ্যতামূলক : সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো পোস্ট বা তথ্য শেয়ার করার আগে তার সত্যতা যাচাই করা বাধ্যতামূলক। গুজব, বিভ্রান্তিকর পোস্ট কিংবা যাচাই না করা তথ্য প্রচার করা যাবে না।
৭. চরিত্রহনন নিষিদ্ধ : কোনো দল, প্রার্থী বা তাদের সমর্থকেরা কারও সুনাম নষ্ট বা চরিত্রহননের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি, সম্পাদনা, প্রচার বা শেয়ার করতে পারবেন না। এসব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ থাকবে।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নির্দেশনাগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রচারণাকে শালীন, সত্যনিষ্ঠ ও নিয়ন্ত্রিত রাখা এবং ভুল তথ্য ও ঘৃণা ছড়ানোর প্রবণতা রোধ করা।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এর তফসিল ঘোষণা করা হবে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে।