কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ১২ বছর ধরে শিকলবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটানো দুই ভাইবোন উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহায়তায় এখন মুক্ত জীবনে ফিরেছেন। উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন আছমা খাতুন ও তার ভাই জাহাঙ্গীরকে শিকলমুক্ত করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। উন্নত চিকিৎসায় তারা এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন।

গনেরগাঁও গ্রামের ফজলু মিয়ার চার সন্তানের মধ্যে দুজন আছমা ও জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসার অভাবে পরিবার তাদের ভাঙা কুঁড়েঘরের দুই কোণে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। ঘটনাটি জানার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাঈদুল ইসলাম গিয়ে তাদের অবস্থা দেখেন। এরপর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সহায়তায় শিকলমুক্ত করে পাঠানো হয় ঢাকার মানসিক হাসপাতালে।

ইউএনও নিজেই তাদের অভিভাবক হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসাকালীন নিয়মিত খোঁজ-খবর নেন এবং সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য একজন পরিচর্যাকারী নিয়োগ দেন তিনি। এক মাস ২২ দিন চিকিৎসা শেষে শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন আছমা খাতুন ও জাহাঙ্গীর। ইউএনও নিজে উপস্থিত থেকে তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, মানুষ হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। সমাজের প্রতিটি মানুষ যদি মানবিক হয়, তাহলে কোনো আছমা বা জাহাঙ্গীরকে আর শিকলবন্দি থাকতে হবে না। আমি চেষ্টা করেছি দুই ভাইবোনকে সুস্থ করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে। তারাও এখন নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখবে।

স্থানীয়রা ইউএনওর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।