মোংলায় খাল থেকে মৃত কুমির উদ্ধার

বাগেরহাটের মোংলার নারকেলতলা খাল থেকে একটি মৃত কুমির উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে খালে কুমিরটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা বনবিভাগকে খবর দেয়। পরে বনবিভাগের সদস্যরা মৃত কুমিরটি উদ্ধার করে সুন্দরবনের করমজলে মাটিচাপা দিয়েছে। তবে বনবিভাগ বলছে, কে বা কারা কুমিরটি মেরে নদীতে ফেলে দেয়। পরে সেটি ভেসে খালে চলে আসে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির জানান, মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌক্যানেল সংলগ্ন মোংলার নারকেলতলা খালে রোববার সকালে একটি মৃত কুমির ভাসতে দেখে স্থানীয়রা বনবিভাগকে খবর দেন। খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার সময় ঘটনাস্থল থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় সেটিকে সুন্দরবনের করমজলে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
আজাদ কবির আরো বলেন, উদ্ধার হওয়া মৃত কুমিরটির গলায় রশি বাঁধা ছিল। কুমিরের সামনের ডান পা নেই। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত ২-৩ দিন আগে কে বা কারা কুমিরটি মেরে গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। এরপর সেটি ভাসতে ভাসতে নারকেলতলা খালে চলে আসে৷ মৃত কুমিরটির বয়স হবে প্রায় ১৫-১৬ বছর। আর পুরুষ এ কুমিরটি লম্বা প্রায় ৯ ফুট। কুমিরটির শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে পঁচে যাওয়ায় কুমিরের কোন অংশই (অঙ্গপ্রত্যঙ্গ) সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।
আজাদ কবির আরো বলেন, কে বা কারা কুমিরটিকে মেরেছে, সে সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এসব প্রাণী হত্যা করা অপরাধ। তাই অপরাধীদের শনাক্তে আমাদের ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
গত প্রায় মাসখানেক ধরে মোংলার বুড়িরডাঙ্গা এলাকার বিভিন্ন চিংড়ি ঘের, বসতবাড়ি ও পুকুরে একটি বড় কুমিরের বিচরণ দেখে সেটি উদ্ধারে একাধিকবার বনবিভাগকে খবর দেয় গ্রামবাসী। কিন্তু সেই কুমিরটি বনবিভাগ উদ্ধার করেননি।
বুড়িরডাঙ্গার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক ও সম্রাট মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, এখানকার ঘেরে ও পুকুরে একটি কুমির অনেক দিন ধরে বিরচণ করছিল। বনবিভাগকে (ডিএফওসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা) বার বার জানানো হলেও তারা কুমিরটি উদ্ধার করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, মানুষের জানমাল রক্ষায় গ্রামের লোকজন কুমিরটি মেরে নদীতে ফেলে দেয়। বনবিভাগ যদি কুমিরটি উদ্ধার করে নিয়ে যেত তাহলে বিলুপ্ত প্রায় এ লবণ পানির প্রজাতির কুমিরটি মারা পড়ত না। আর যারাই এটিকে মারুক না কেন তারা তো অবশ্যই জানমালের ক্ষতির আশঙ্কায়ই এটা করেছেন। তবে এখানে বনবিভাগের চরম গাফিলতি রয়েছে।