ধনিয়া পাতায় স্বপ্ন বুনছেন সাটুরিয়ার চাষিরা
প্রকৃতিতে বইছে হেমন্তের হাওয়া, আর মাঠজুড়ে ভেসে আসছে ধনিয়া পাতার মোহনীয় সুবাস। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সব জায়গায় এখন ধনিয়া পাতার চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। স্বল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ ফিরিয়ে আনছে এই ফসল। এই ধনিয়া পাতায় নিজেদের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা।
সাটুরিয়ার বরাইদ, খলিশা ডহূরা, হামজা, ছনকা, তিল্লি, হরগজ, দড়গ্রাম, ফুকুরহাটি ও ধানকোড়া—এই ৯টি ইউনিয়নের মাঠজুড়ে এখন ধনিয়া পাতার বাম্পার ফলন। সবুজ পাতার এই ফসলের গন্ধে ভরে উঠেছে গ্রামের বাতাস, আর সেই পাতা প্রতিদিনই পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি আড়তে।
উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের উত্তর ছনকা এলাকার ঘুনা গ্রামের কৃষক রহমান মিয়া জানান, এ বছর তিনি অর্ধ বিঘা জমিতে ধনিয়া পাতা আবাদ করেছেন। জমি তৈরি, বীজ ও পরিচর্যায় খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছেন প্রায় এক লাখ টাকার পাতা। এভাবে বিক্রি করতে পারলে আরও ভালো লাভ হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন : জেনে নিন মুখে বিট মাখলে কী হবে?
সাটুরিয়া সদর উপজেলার স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, গ্রামে ধনিয়া পাতার দাম কিছুটা কম হলেও শহরে এর চাহিদা অনেক। প্রতিদিনই গাড়িভর্তি ধনিয়া পাতা ঢাকা পাঠানো হচ্ছে। একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি আমরাও ভালো আয় করছি।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪৮ হেক্টর জমিতে ধনিয়া পাতার আবাদ হয়েছে।
আরও পড়ুন : ত্বকের যত্নে ধনিয়া পাতা
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, রবি মৌসুম ধনিয়া চাষের সবচেয়ে উপযোগী সময়। সাটুরিয়ার মাটি ও আবহাওয়া এই ফসলের জন্য আদর্শ। উন্নত বীজ ও আধুনিক পরিচর্যার কারণে উৎপাদিত পাতার মান ও ঘ্রাণ দুটোই অত্যন্ত ভালো। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এখন গ্রামের ফসলের সুগন্ধ ছড়াচ্ছে রাজধানীতেও—এটা সাটুরিয়ার কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

রানা মাহবুব, মানিকগঞ্জ (সাটুরিয়া-ঘিওর)