আতিফ আসলামের কনসার্ট আয়োজনে ব্যর্থতা, আইনি পদক্ষেপ নিলেন ব্যারিস্টার আহসান ভূঁইয়া
ঢাকায় আতিফ আসলামের কনসার্টের টিকিট বিক্রির পরও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আয়োজনে ব্যর্থ হওয়ায় আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ভুক্তভোগী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান ভূঁইয়া।
কনসার্টটির আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেইন স্টেজ ইনক এবং এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কাজী রাফসান-এর কাছে একটি আনুষ্ঠানিক লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে টিকিট ক্রেতাদের সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত ও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়েছেন।
অন্যথায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিআইডি সাইবার ক্রাইম ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নোটিশে টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতারণা, তথ্য গোপন ও ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কনসার্টটি আগামী ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আহসান হাবিব ভূঁইয়া আয়োজকদের নির্ধারিত টিকিটিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কনসার্টটির প্রিমিয়াম জোনের পাঁচটি টিকিট ক্রয় করেন, যার জন্য মোট ২৮,৮৪৪ টাকা পরিশোধ করা হয়।
নোটিশ অনুযায়ী, আয়োজকরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কনসার্টটির প্রচারণা ও টিকিট বিক্রি চালিয়ে গেলেও একটি বড় পরিসরের জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমতি, নিরাপত্তা ছাড়পত্র ও আনুষঙ্গিক অনুমোদন তারা আদৌ সংগ্রহ করেননি।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম তার যাচাইকৃত ফেসবুক পেজে একটি ঘোষণা দেন, যেখানে তিনি জানান যে প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নিরাপত্তা ছাড়পত্র নিশ্চিত না হওয়ায় তিনি ঢাকায় ওই কনসার্টে অংশ নিচ্ছেন না।
লিগ্যাল নোটিশ অনুযায়ী, এই ঘোষণা দেওয়ার আনুমানিক এক ঘণ্টা পর আয়োজক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব একটি বিবৃতি দিয়ে অনুষ্ঠানটি জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচির কারণে ‘স্থগিত’ করা হয়েছে বলে দাবি করে, যা নোটিশে বিভ্রান্তিকর ও পরস্পরবিরোধী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আহসান হাবিব ভূঁইয়ার অভিযোগ, প্রয়োজনীয় আইনি অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও আয়োজকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যান। ‘ফাইনাল ৪ আওয়ার্স লেফট’, ‘লাস্ট ৬০ মিনিটস’-এর মতো পোস্ট দিয়ে শেষ মুহূর্তে টিকিট কেনার আহ্বান জানানো হয়, যা ইচ্ছাকৃত তথ্য বিকৃতি ও অবৈধ আর্থিক সুবিধা অর্জনের শামিল এবং এর ফলে ক্রেতারা আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
লিগ্যাল নোটিশে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজের অতীত ব্যবসায়িক ইতিহাসও তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, গত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠানটি একাধিকবার নাম ও ব্যবসার ধরন পরিবর্তন করেছে, যার মধ্যে আসবাবপত্র, কৃষিপণ্য, বেকারি ও লাইফস্টাইল পণ্যের মতো ভিন্ন ভিন্ন খাতের ব্যবসার তথ্য রয়েছে, যা বর্তমান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে আহসান হাবিব ভূঁইয়া সাত দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং এসব বিষয়ে লিখিত নিশ্চয়তা দাবি করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, যদিও এই নোটিশটি তার ব্যক্তিগত দাবির ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে, তবে এই ঘটনায় বহু টিকিট ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দাবি পূরণ না হলে তিনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিআইডি সাইবার ক্রাইম ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করার অধিকার সংরক্ষণ করছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক