বিআরটিসি বাস আটকে যাত্রী হয়রানির অভিযোগ বাস মালিকদের বিরুদ্ধে
মৌলভীবাজারের চাঁদনীঘাট এলাকায় কমলগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী একটি বিআরটিসি বাস আটকে যাত্রীদের জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চাঁদনীঘাট মোটর বাস মালিক সমিতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, সমিতির সভাপতি আনসার মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ রুপনের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় যাত্রীরা প্রতিবাদ জানালে কয়েকজনকে হেনস্তা করা হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদনীঘাট এলাকায় বাসটি আটকানোর পর ভেতরে থাকা সকল যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, পর্যটননগরী কমলগঞ্জ থেকে দীর্ঘদিন ধরে আন্তজেলা বাস যোগাযোগ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছিল। এ প্রেক্ষাপটে কমলগঞ্জ–সিলেট ও কমলগঞ্জ–ঢাকা সড়কে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি কমলগঞ্জ–সিলেট সড়কে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এলেও চাঁদনীঘাট মোটর বাস মালিক সমিতির কয়েকজন নেতার পক্ষ থেকে বাধা সৃষ্টি ও যাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠছে।
ঘটনার পর কমলগঞ্জবাসীসহ স্থানীয় সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা যাত্রী হয়রানি এবং সরকারি পরিবহণ চলাচলে বাধা দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। স্থানীয়দের আশঙ্কা, আগে যেভাবে শ্রীমঙ্গল–সিলেট রুটে বিআরটিসি বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, একই কৌশলে এখন কমলগঞ্জ–সিলেট সড়কেও বিআরটিসি বাস বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে চাঁদনীঘাট মোটর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ রুপন বলেন, আমরা যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়েছি ঠিকই, তবে কাউকে হেনস্তা করা হয়নি। তিনি আরও দাবি করেন, কমলগঞ্জ থেকে সিলেট সড়কে বিআরটিসি বাস চলাচল করতে হলে আমাদের চাঁদনীঘাট বাস মালিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
বিআরটিসি বাস আটকানো ও যাত্রী হেনস্তার অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুজ্জামান পাভেল জানান, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) চাঁদনীঘাট বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও বিআরটিসি বাস পরিচালনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যাত্রীদের হেনস্তা বা হয়রানির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আহাদ মিয়া, মৌলভীবাজার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ)