হাদির মৃত্যু : সকালেও স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড়েও একই চিত্র দেখা গেছে। এসময় শাহবাগ মোড়ে মাইকে আজান দিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাতের তুলনায় লোকসংখ্যা অনেক কম হলেও শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে ছাত্র-জনতা। এসময় বিক্ষোভকারীদের ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এর আগে, মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চত্বর ও রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। শাহবাগের বিক্ষোভে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বুয়েটের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।
এদিকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জায়মা ইসলাম ফেসবুকে এক মর্মান্তিক পোস্টে লেখেন, আমি আর শ্বাস নিতে পারছি না। অনেক ধোঁয়া। আমি ভেতরে। তোমরা আমাকে মেরে ফেলছো। পরে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় আটকে পড়া প্রায় ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়।
শহীদ হাদির মৃত্যুর পর রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে তিনি আগামীকাল শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন। এছাড়া সরকার ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব নেবে বলেও জানান।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মরদেহ দেশে আনা হবে। হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে আজ বাদ জুমা দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক