কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে দিনাজপুর, ১১ ডিগ্রিতে নেমে জনজীবন বিপর্যস্ত
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে শীতের প্রকোপ ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠছে। ডিসেম্বরের শেষভাগে এসে কনকনে ঠান্ডা, হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশার সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকা কুয়াশা জনজীবনে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। পৌষ মাসের শুরুতেই জেঁকে বসা এই শীতের দাপটে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং জেলার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।
আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোরের আলো ফোটার আগেই দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায়। সকাল থেকে হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকায় সড়ক ও হাটবাজারে মানুষের চলাচল ছিল সীমিত। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, আর যারা বের হচ্ছেন তারা মোটা শীতবস্ত্র পরে চলাচল করছেন।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯২ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
বিশেষ করে খানসামা ও বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতের প্রকোপ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তীব্র ঠান্ডায় দিনমজুর ও রিকশাচালকরা কাজে বের হতে পারছেন না। বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে বাইরে বের হওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে।’ অটোরিকশা চালক ফারুক ইসলাম জানান, আগে দিনে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা আয় হতো, এখন তীব্র শীতের কারণে তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় নেমে এসেছে।
কৃষিখাতেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আবু নাঈম জানান, এভাবে শীত ও কুয়াশা চলতে থাকলে বোরো ধানের চারা পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে শীতল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্রা কমে গেছে। এ মাসের ২৮ তারিখ থেকে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে এবং জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। এ অবস্থা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।’

মাসুদ রানা, দিনাজপুর (বীরগঞ্জ-খানসামা)