৯/১১ নিয়ে যত সিনেমা

যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে সন্ত্রাসী হামলা চালায় উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় দুই হাজার ৯৭৭ জন নিহত ও ২৫ হাজারের অধিক মানুষ আহত হয়। এ ছাড়া ধ্বংস হয় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অবকাঠামো ও সম্পদ। এই আলোচিত সন্ত্রাসী হামলাকে সংক্ষেপে ৯/১১ (নাইন-ইলেভেন) বলা হয়।
বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ওই ঘটনার ১৯ বছর আজ। এ হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন যেমন চলছে আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক; তেমনি নির্মিত হয়েছে সিনেমা-ডকুমেন্টারি। আজকের দিনে চলুন জেনে নেওয়া যাক ৯/১১ নিয়ে নির্মিত আলোচিত সিনেমাগুলো সম্পর্কে।

৯/১১
হামলার এক বছর পরই নির্মিত হয় ফ্রাঙ্কো-আমেরিকান ডকুমেন্টারি সিনেমা ৯/১১। সিবিএস নিউজের সুসান জিরিনস্কির প্রযোজনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেন জুলেস নওদেট, গ্যাডন নওদেট ও এফডিএনওয়াই দমকলকর্মী জেমস হ্যানলন। এই ডকুমেন্টারি সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল হামলার নিউইয়র্ক সিটি ফায়ার বিভাগের দৃষ্টিকোণ থেকে।

১১’০৯’’০১ সেপ্টেম্বর ১১
বিভিন্ন ঘটনার ১১টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মিলিত করে ২০০২ সালে মুক্তি পায় সিনেমা ১১’০৯’’০১ সেপ্টেম্বর ১১। এটি পরিচালনা করেন ১১টি আন্তর্জাতিক আর্ট হাউসের পরিচালক। সিনেমার শেষ দৃশ্যে ১১ মিনিট, ৯ সেকেন্ডের একটি ফ্রেম তৈরি করে নাইন-ইলেভেনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

ফারেনহাইট ৯/১১
মাইকেল মুর পরিচালিত এই প্রামাণ্যচিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। প্রামাণ্যচিত্রে দেখা গেছে মাইকেল মুর, জর্জ ডব্লিউ বুশ, ডোনাল্ড রামসফেল্ডসহ অনেককে। সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে, বুশ প্রশাসনের সঙ্গে মাইকেল মুরের হিসাব। ঘটনার পরবর্তী ঘটনা অনুসন্ধান এবং বিশেষ করে ইরাকে আমেরিকার আগ্রাসন।

দ্য ফ্লাইট দ্যাট ফট ব্যাক
ইউনাইটেড এয়ারলাইনস ফ্লাইট-৯৩-এ কী ঘটেছে তার অনুসন্ধান করা প্রথম সিনেমা এটি। ফ্লাইটের ডকুড্রামা ভয়েস রেকর্ডিং এবং যাত্রীদের প্রিয়জনদের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। ব্রুস গুডিসনের পরিচালনায় এটি মুক্তি পায় ২০০৫ সালে। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন কাইফার সুথারল্যান্ড, গ্রেগ ব্যানসন, অঙ্কুর ভাট, ব্রায়েন ফ্রাইডে, টনি ইয়াংব্লাড, এলিসে হগলেনসহ অনেকেই।

ইউনাইটেড ৯৩
সন্ত্রাসবাদের মুখে মানবিক স্থিতিশীলতা নির্দেশ করার জন্য ফ্লাইট-৯৩-এ সম্মিলিত বীরত্বের যেমন ঘটনা ঘটেছে, তা কল্পনা করে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন পরিচালক পল গ্রিনগ্রাস। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০০৬ সালে। এতে অভিনয় করেছেন ক্রিস্টিয়ান ক্লেমনসন, শায়েন জ্যাকসন, ডেভিড অ্যালান বাসে, পিটার হারম্যান, ড্যানিয়েল সৌলি, ট্রিশ গেটস, কোরি জনসন, রিচার্ড বেকিনস, মাইকেল জে, রেনল্ডস খালিদ আবদাল্লাসহ অনেকেই।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার
হামলার সময় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের প্রথম দুই উত্তরদাতার দৃষ্টিকোণ থেকে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অলিভার স্টোন। ২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাতে অভিনয় করেছেন নিকোলাস কেজ, মারিয়া বেলো, মাইকেল পেনা, ম্যাগি গিলেনহাল, স্টিফেন ডরফ ও মাইকেল শ্যাননসহ অনেকেই। তবে সিনেমাটি বক্স অফিসে সফলতা দেখাতে পারেনি।

রেইন ওভার মি
হামলায় স্বজন হারানো একজনের কাহিনি নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘রেইন ওভার মি’ সিনেমাটি। এটি নির্মাণ করেছেন মাইক বাইন্ডার। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন অ্যাডাম স্যান্ডলার, ডন চ্যাডেল, জাদা পিনকেট স্মিথ, লিভ টাইলার, ডোনাল্ড সুদারল্যান্ড, জাফরান বুড়ো ও মাইক বাইদার।

রিমেম্বার মি
পারিবারিক মেলোড্রামাকে ৯/১১ হামলার সঙ্গে যুক্ত করে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অ্যালেন কুল্টার। ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন রবার্ট প্যাটিনসন, এমিলি ডি রাভিন, ক্রিস কুপার, লেনা অলিন চার্লস হকিনস, পিয়ের্স ব্রসনান, মার্থা প্লিম্পটনসহ অনেকেই।

দ্য সেকেন্ড ডে
৩৮ মিনিটের এই সিনেমার পরিচালক ব্রুক পিটারস ৯/১১-এর দিন পাঁচ বছর বয়সে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে যোগ দিয়েছিল। এক দশক পর ১৪ বছর বয়সে সে এই ডকুমেন্টারিটি নির্মাণ করে, যেখানে দেখানো হয়েছে নিউইয়র্কের শিশু এবং তাদের স্কুলের সহপাঠীদের দৃষ্টিভঙ্গি।

এক্সট্রিমলি লাউড অ্যান্ড ইনক্রেডিবলি ক্লোজ
ঘটনার এক দশক পর ২০১১ সালে সিনেমাটি নির্মাণ করেন স্টিফেন ডালড্রি। যেখানে অভিনয় করেছেন টমাস হর্ন, মেক্স ভন সিডো, স্যান্ড্রা বুললোক, টম হ্যান্কস, ভায়োলা ডেভিস, ম্যাডিসন আর্নল্ড, জন গুডম্যান ও জেফ্রি রাইট। জনাথন সাফ্রান ফোরের দ্বিতীয় উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে।

জিরো ডার্ক থার্টি
নাইন-ইলেভেনের ঘটনায় সবচেয়ে সফল সিনেমা জিরো ডার্ক থার্টি। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন ক্যাথরিন বিগ্লো। ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন জেসিকা চ্যাসটাইন, আলফ্রেডা ফ্রান্সেস, জেসন ক্লার্ক জেনিফার, হ্যারল্ড পেরিনিউ। এই সিনেমায় দেখানো হয়েছে, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ভেতর থেকে তৈরি জরুরি কলের ৯০ সেকেন্ডের একটি অডিও, আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পাওয়ার চাপ এবং গুরুত্ব।
তথ্যসূত্র : দ্য কালচার ট্রিপ