‘রইস’ নিয়ে পরিবেশকের আক্ষেপ
শেষ পর্যন্ত যে পাকিস্তানে শাহরুখ খানের ‘রইস’ প্রদর্শিত হয়নি, সেটা এখন সবারই জানা। দেশটির সেন্সর বোর্ডের সব সদস্যই একবাক্যে নিষেধাজ্ঞার খড়্গ চালান ছবিটির ওপর। এতে বেশ বেকায়দায় পড়েন ভারতের চলচ্চিত্র পরিবেশক হীরাচাঁদ দান্দ। এর কারণ তিনিই ‘রইস’ ছবির স্বত্ব কিনেছিলেন পাকিস্তানে প্রদর্শনের জন্য। ছবিটি পাকিস্তানে আলোর মুখ দেখেনি বলে যারপরনাই হতাশ হয়েছেন দান্দ, এমনটাই জানিয়েছে ডিএনএ ইন্ডিয়া। ভারতীয় চলচ্চিত্র রপ্তানি সংস্থার সভাপতি হীরাচাঁদ দান্দ স্বীকার করেন, তিনি এই ছবি কিনেছিলেন এই ভেবে যে পাকিস্তানে শাহরুখ খান অভিনীত ছবির বেশ চাহিদা রয়েছে।
‘প্রথমবারের মতো শাহরুখ খান অভিনীত কোনো ছবি আমি পাকিস্তানে প্রদর্শনের জন্য কিনেছিলাম। এই ছবি থেকে আমার অনেক প্রত্যাশা ছিল, কারণ পাকিস্তানের ভক্তরা শাহরুখের ছবির জন্য অনেক আগ্রহী ছিলেন। এই ছবির নায়িকা মাহিরা খানও পাকিস্তানের। তা ছাড়া ছবির কেন্দ্রে রয়েছে একটি মুসলমান চরিত্র, বক্স-অফিসে নিশ্চিত সফল হতো,’ বললেন হীরাচাঁদ দান্দ।
দান্দ আক্ষেপ করে বলেন, “আমি খুবই অবাক হয়েছি যখন শুনেছি, পুরো সেন্সর বোর্ড ছবিটি একসঙ্গে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানে তিন জায়গায় সেন্সর বোর্ড রয়েছে—ইসলামাবাদ, লাহোর ও করাচি। এ তিনটির মধ্যে যেকোনো একটা বোর্ড ছবি দেখে ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু কিছু কিছু ছবির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যেগুলো বিতর্কিত, সেসব ছবির ছাড়পত্র দেওয়ার সময় তিনটি বোর্ডের সদস্যরা একত্র হন। ‘রইস’-এর ক্ষেত্রে তিনটি বোর্ডের সদস্যরা একসঙ্গে ছবি দেখেছেন। এরপরই তাঁরা ছবিটি নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এটা অনেক বড় বাধা ছিল।”
দান্দ যোগ করেন, ‘বোর্ড মনে করেছে, এটা নজিরবিহীন যে একজন নায়ক সহিংস মুসলমান চরিত্রে অভিনয় করবেন, যে কি না হত্যার নেশায় মেতে উঠবেন। ছবির বেশির ভাগ দৃশ্যেই দেখা গেছে, নায়ক নেতিবাচক চরিত্র, যে খারাপ কাজ করে। এই চরিত্রে শাহরুখের মতো একজন বড় তারকা অভিনয় করেছেন।’
অবশ্য শাহরুখ খান ও ছবির পরিচালক রিতেশ সিধওয়ানি দুজনই শুরুতে পাকিস্তানে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁরা আপাতদৃষ্টিতে পাকিস্তানে ছবি মুক্তি না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানে ‘কাবিল’ মুক্তির পর তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেন এবং ছবিটি সেখানে প্রদর্শনের জন্য প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর যখন পাকিস্তানে ‘রইস’ মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়, তখন শাহরুখভক্তের মতো পাকিস্তানের অভিনেত্রী মাহিরাও খুশি হয়েছিলেন, কিন্তু সেই খুশি স্থায়ী হয়নি। পাকিস্তানের সেন্সর বোর্ড প্রথমে প্রদর্শনের ব্যাপারে দোনোমোনা করলেও পরে আর ছাড়পত্র দেয়নি ‘রইস’কে।