হৃতিকের সাথে দুষ্টুমি করতে চাই : আলিয়া
চাল-চলনে মেয়েটি সবসময় ‘কুল’! কী কথায়, কী কাজে, কী বড়পর্দায়- এক ফোঁটা জড়তার লেশমাত্র নেই আলিয়া ভাটের মাঝে! টিনেজ সেনসেশন থেকে বলিউডের পরিণত অভিনেত্রী হয়েছেন দ্রুতই। মহারথীরা যখন রুপালি পর্দা ছাড়বার সংকেত দিচ্ছেন, তখন তো এ কথা বলাই চলে যে আলিয়াদের একচ্ছত্র যুগ এলো বলে! ফুরফুরে আলিয়া হাসি-ঠাট্টায় মাতোয়ারা থাকেন হরদম। এমনকি কেউ তাকে ‘সাধারণ জ্ঞানের অভাবজনিত কোনো কারণে’ বেমক্কা তাচ্ছিল্য করলে হাসতে পারেন তাতেও! ছেলেবেলা থেকেই বলেছেন যে অভিনেত্রী হতে চান, আবার সাথে এও বলেন যে প্রতিদিন নিজের চেহারাসুরত সুন্দর দেখলে গা জ্বলে যায় তাঁর! নিজের বিব্রতকর কোনো মুহূর্তের কথা বলেন অকপটে, এমনকি তা চুমুর দৃশ্যের মতো একটু স্পর্শকাতর দৃশ্য হলেও পরোয়া নেই। এই ফুর্তিবাজ ‘কুল’ মেয়েটির সাথে বি টাউনের অভিজাত গণমাধ্যম ‘ফিল্মফেয়ার’-এর আলাপসালাপও বেশ ‘কুল’ই হয়েছে!
সবসময়েই কি অভিনেত্রী হতে চেয়েছেন?
একদম, তবে অনেক সময়ই তাজ্জব লাগে যে আমি কেন অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলাম! আমার মনে পড়ে, আমি রুমে বসে টিভিতে দেখতাম কারিশমা আর গোবিন্দ কোনো এক বাগানে নাচগান করছে। তখন আমি মাথা দোলাতাম আর বলতাম বাহ, একেই বলে মজা! প্রতি রবিবার নানা আর নানীকে পারফর্ম করে দেখাতাম। একটু নাচ দেখালেই দারুণ তালি মিলত। বার্থডে পার্টিতে, ক্রিসমাস পার্টিতেও পারফর্ম করতাম। পিচ্চি হলে কী হবে, আমি তখনো চাইতাম লোকে আমার দিকে চেয়ে থাকুক! এটাই মনে হয় কারণ ছিল।
কখনো এমন সময় আসে যখন মনে হয় ‘ইশ, যদি অভিনেত্রী না হতাম’!
একদম না। যদিও মাঝেমধ্যে আমি চাই যে আমাকে ভালো না দেখাক, একটা ‘ব্যাড হেয়ার ডে’ যাক! আমি নিশ্চিত যে অনেক মেয়ে আমার সাথে একাত্ম হতে পারবে এ ব্যাপারে। তারা নিশ্চয়ই চায় যে মাঝেমধ্যে তাদের একটু স্বাভাবিক দেখাক! মানুষের সাথে সংযুক্ত থাকাটা জরুরি তো!
আপনার কোন তিনটা বিষয় আমরা জানি না?
১. আমার অন্ধকার ভয় লাগে। ২. আমার বিমানে অরুচি। ৩. আমি গান শুনে কাঁদি।
আরেকটা ব্যাপার। আমি জোরে আওয়াজ দিয়ে ঢেঁকুর দেই, কোনো লজ্জা ছাড়াই এবং যে কারো সামনে! জাস্ট ঢেঁকুর দেই আর কি!
সবচেয়ে বিব্রতকর মুহূর্ত...
একবার অন্তর্বাস না পরেই স্কুলের একটা দৌঁড় প্রতিযোগিতায় চলে এসেছিলাম। আমি শুধু শর্টস পরেছিলাম, আর স্কুলে পৌঁছে ব্যাপারটা খেয়ালে আসে আমার!
কোনো অভিনেতার সাথে বিশেষ কিছু...
হৃতিকের সাথে দুষ্টুমি করতে চাই। ও তো এখন সিঙ্গেল!
ইমতিয়াজ তো আপনাকে পরের ছবিতে নেননি। কষ্ট পাননি?
না না। রোল আমার সাথে না মিললে আমাকে দিয়ে সাইন করাবে কোন দুঃখে? আমি ওই রোলটার জন্যই ফিট নই। তো আমাকে পছন্দ করে বলে লোকটা নিজের ছবি ডোবাবে নাকি!
কোন বিষয়টা মিস করেন, সাধারণ মেয়ে হলে যেটা করতেন?
শপিং মলে যেতে পারি না। প্যালাডিয়ামে শপিং করতে খুব ভালো লাগত। এখন তো আর পারি না।
শুটিং না থাকলে কী করেন?
বন্ধুবান্ধবের সাথে ফুর্তি করি। ছবি দেখতে যাই বা বাসায় ছবি দেখি। আহা, যদি আমার ছুটির দিন থাকত!
কারো সাথে নিজের ‘গোপন কথা’ ভাগাভাগি করেছেন?
অভিষেক বর্মন (টু টেস্টসের পরিচালক)
কোন পুরুষের প্রতি ঝুঁকতে পারেন, যখন দেখেন....
দারুণ পারফিউম, দারুণ রসবোধ। তবে দেখতেও দারুণ হতে হবে কিন্তু!
কোন পুরুষের প্রতি বিরক্ত হন...
যদি মুখ দিয়ে বাজে গন্ধ বেরোয়। কথা বলব কি করে তার সাথে বলুন? যারা কেবল নিজেদের কথা বলে, ওদেরও অসহ্য লাগে।
কোন ধরনের ছেলে পছন্দ?
‘ব্যাড বয়’ টাইপ। ভদ্রগোছের লোকজন আমার ভালো লাগে না।
কখনো চুমু খেয়ে পরে আফসোস হয়েছে?
হ্যাঁ। কিন্তু কে বা কিভাবে তা বলব না। কিন্তু হ্যাঁ, খুবই আফসোস হয়।
এমন একটা জিনিস চান যা পরিনীতি চোপড়া আর শ্রদ্ধা কাপুরের আছে...
পরিনীতির আছে আদিত্য চোপড়া, মানে যশ রাজ ফিল্মস আর কি! শ্রদ্ধার ‘তুম হি হো (আশিকী ২) আর গ্যলিয়া (এক ভিলেন)।
কোনো ভক্তের উদ্ভট কাণ্ড...
উদ্ভট না তবে সৃষ্টিশীল বলা যায়। এক ভক্ত আমাকে একটি বই পাঠিয়েছিল জন্মদিনে, ‘দ্য ক্রনিকলস অব আলিয়া’। আমার জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত সব ঘটনা তিনি লিখে পাঠিয়েছেন ওই সংকলনে। দারুণ কাজ ছিল!
কোন পরিচালকের সাথে কাজ করতে চান?
রাজকুমার হিরানি, অয়ন মুখার্জি আর জয়া আখতার।
ক্যান্ডেল লাইট ডিনার না লং ড্রাইভ?
বাসায় বসে বার্গার। যদি পছন্দ করতেই হয় তাহলে সম্ভবত লং ড্রাইভ। আমার ক্যান্ডেল লাইট ডিনার একেবারে অসহ্য লাগে।
তরুণ ছেলেমেয়েদের কী উপদেশ দেবেন?
আমি উপদেশ দেওয়ার জন্য খুবই ভুল একজন! আমার মনে হয় প্রত্যেক মেয়ের উচিত অন্য যে কারও চেয়ে নিজেকে বেশি বেশি ভালবাসা। তাহলেই তারা যাবতীয় আঘাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে। ছেলেদের সৎ আর সোজাসাপ্টা হওয়া উচিত। অনেকসময় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে অনেক চটজলদি সম্পর্কে জড়ায়। এমন অবস্থায় ছেলেদের উচিত মেয়েটাকে একটু শান্ত করা। মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে অনেক বেশি স্পর্শকাতর। এ কারণেই তারা যখন কাউকে ভালবাসে, তখন নিজের কথা এক্কেবারে ভুলে যায়। এ কারণেই দুনিয়ার লোক চাইলেই তাদের ক্ষতি করতে পারে সহজে। এটা একদম উচিত নয়।
কাউকে পছন্দ করে ফেললেন কিন্তু দেখা গেল ব্যাট-বলে মিলছে না...
আমি যোদ্ধা। আমি জেদীও। যতক্ষণ পারবো লড়াই চালিয়ে যাবো। তারপর আমি বিষয়টা স্রেফ ছেড়ে দেব। তবে আমার বিশ্বাস, কাউকে ভালবাসলে তাকে মুক্ত করে দাও। সে যদি তোমার হয়ে থাকে, তাহলে সে ফিরবেই। আর তেমনটি না হলে বুঝে নিতে হবে যে সে কখনোই তোমার ছিল না।
অভিনেত্রীরাও বন্ধু হতে পারে, বিশ্বাস করেন?
অবশ্যই পারে। আমি শ্রদ্ধা আর পরিণীতির সাথে আড্ডা দিয়েছি, আর ওরা দারুণ! কেবলমাত্র আমরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ‘ওহ, আমার তো আসলে ‘এমন’ হওয়া দরকার’ টাইপ আচরণ করার কোনো দরকারই তো আমি দেখি না! আমি যার বা যাদের সাথে আড্ডা দেব, অবশ্যই বন্ধু হয়েই দিতে পারবো। তারা কে বা কেমন তাতে কি এসে যায়!
আপনি না কি পরিণীতিকে সাজাতে চেয়েছিলেন?
আমি চাইনি, ও চেয়েছিল। আমি কে? যে অন্যকে সাজাবো? আমাদের যখন দেখা হলো, আমরা তখন ওজন কমাবার ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। আমি, পরিণীতি আর হুমা কোরেশি। শরীরটাকে ঠিকঠাক ‘মাপে’ আনার ব্যাপারে অনেক কথা বলেছি। আমাদের আলাপের বিষয়টা ছিলো কাজ নিয়ে- কাজটা যে গুরুত্ব দিয়ে করা দরকার সেটা নিয়েই কথা হয়েছে।
ইন্ডাস্ট্রিতে আসলে বন্ধুত্ব জিনিসটা বিশেষ কাজ করে না, তাই না?
এটা একদমই ঠিক না। আমি যেসব ছেলেদের সাথে কাজ করছি, ওদের সাথে আমার দারুণ খাতির। সিদ্ধার্থ মালহোত্রা, বরুণ ধাওয়ান, অর্জুন কাপুর, রণদীপ হুডা- সবার সাথেই। বরুণ আর সিদ্ধার্থ একে অন্যের খুব ভালো বন্ধু। রণবীর সিং আর অর্জুন তো পুরোই জিগরি দোস্ত! এমন বন্ধুত্বের খাতিরে তাদের তো প্রতিদিন যোগাযোগ করতে হয় না। ওরা নিজ থেকেই অন্যের খোঁজ নেয়। যখনই ওদের দেখা হয় সেটা দারুণ একটা মিটিং হয়। কারণ ওরা বুঝদার এবং স্মার্ট। বিষয়টা এরকম যে, যখন আমরা ‘টু স্টেটস’ এর প্রচারণা করেছি, আমি সাথে ‘এক ভিলেন’ আর ‘ম্যায় তেরা হিরো’রও প্রচারণা করেছি। এটা এমনই হওয়া উচিত, যুদ্ধের মত নয়!
অর্জুন বলেছেন যে তার নাকি আপনাকে চুমু খেতে ভালো লেগেছে...আপনার কি মনে হয় , আপনি ভালো চুমু খেতে পারেন?
অবশ্যই, আমার তাই বিশ্বাস। কেউ কিন্তু এ ‘বিষয়ে’ কোনো অভিযোগও করেননি। অভিযোগ করলে আপনাকে জানাবো! আর বেচারা অর্জুনের এই প্রশ্নবাণে ঝাঁঝরা হওয়ার বিষয়টায় আমি একদম বোর হয়ে গিয়েছি। তিনি জায়গা মতো বসেছিলেন, কাজেই তাকে উত্তরও দিতে হয়েছে (হাসি)। আমাকে চুমু খেতে তার ভালো লাগেনি, এমন কথা তো তিনি বলতেই পারবেন না!