মিস ইউনিভার্স মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন মডেল ও অভিনেত্রী তানজিয়া জামান মিথিলা। বিশ্বের সামনে দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্প, জামদানি শাড়িকে। মিথিলার জাতীয় পোশাকটি দেশের রাজকীয় ঐতিহ্য তুলে ধরেছে।

আজ বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজের অনুভূতি ও পোশাকের বিশেষত্ব প্রকাশ করে ফেসবুকে এক পোস্টে তানজিয়া জামান মিথিলা লিখেছেন, ‘মিস ইউনিভার্স মঞ্চের জাতীয় পোশাকটি সজ্জিত হয়েছে একটি রাজকীয় জামদানি শাড়িতে, যা বাংলাদেশের রাজকীয় ঐতিহ্যের এক জীবন্ত উত্তরাধিকার।’

প্রচীন মুঘল সম্রাট, নবাব এবং বাংলার অভিজাত শেণীর জন্য তৈরি এই জামদানি শাড়ি শত শত বছরের রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক। মিথিলার কথায়, ‘এটি এমন একটি কাপড়, যার প্রতিটি সুতোয় রয়েছে শৈল্পিকতা, নিষ্ঠা এবং কালজয়ী সৌন্দর্য।’

এই পোশাকটি হাতে বোনা এক জামদানি শাড়ি- যা সৌন্দর্য, ঐতিহ্য এবং স্থিতিস্থাপকতার এক জীবন্ত প্রকাশ। এর ঐতিহ্য শুরু হয় ১৭ শতকের মুঘল যুগ থেকে। যখন জামদানি ছিল রাণী ও অভিজাতদের কাছে বিলাসিতা এবং রাজকীয় আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো।

পোশাকটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে সেরা সুতির তন্তু। এটি সজ্জিত হয়েছে সোনালী জরি মোটিফে। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী তাঁতশিল্পীদের দ্বারা নিপুণভাবে বোনা হয়েছে এই বিশেষ শাড়িটি। জামদানির জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চল থেকেই এর বুনন-প্রথা বহমান। ২০১৩ সালে ইউনেস্কো এই প্রাচীন শিল্পকলাকে মানবতার এক অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা জামদানির চিরন্তন সৌন্দর্য এবং কারুশিল্পকে বৈশ্বিকভাবে উদযাপন করে।

মিথিলা জানান, মিথিলার পরা এই জামদানি শাড়িতে ফুটে উঠেছে স্নিগ্ধ শাপলা মোটিফ। এই বিশেষ শাড়িটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি এবং এটি সম্পূর্ণ করতে সময় লেগেছে ১২০ দিনেরও বেশি। শাড়িটির ডিজাইনার হলেন আফ্রিনা সাদিয়া সৈয়দা। শুধু পোশাকেই নয়, মিথিলার সোনার গয়নাতেও শোভা পাচ্ছে একই শাপলা ফুল। ৬ ইয়ার্ডস স্টোরি লরা খানের নকশা করেছেন।

মিথিলার এ পদক্ষেপটি একদিকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের মৃৎশিল্প এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।