অলিভ অয়েলের ১০ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

Looks like you've blocked notifications!
ছবি- ফ্রিপিক

স্বাস্থ্যের উপকারিতার জন্য অলিভ অয়েল বেশ জনপ্রিয়। পুষ্টিবিদরা সয়াবিন তেলের বদলে অলিভ অয়েল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই তেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর। নিঃসন্দেহে, পরিমিত পরিমাণে অলিভ অয়েল খেলে বা ব্যবহার করলে অসংখ্য স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য সুবিধা সরবরাহ করতে পারে। তবে, অত্যধিক অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

ব্রণ

উজ্জ্বল ত্বক পেতে ঘুমানোর আগে অনেকেই ভার্জিন অলিভ অয়েল দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করে থাকেন। এই তেলে ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে। যা হাইপারপিগমেন্টেশন হালকা করে। প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করে। তবে অলিভ অয়েল ত্বকে দ্রুত শোষিত হয় না। যার ফলে ত্বকে পুরু স্তর তৈরি হতে পারে। এতে ত্বকের ছিদ্রগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এই আটকে থাকা ছিদ্রগুলির ভিতরে ময়লা জমে যায়। এসব ময়লা তখন আপনার ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি করে। সুতরাং, প্রতি রাতে ত্বকে জলপাই তেল প্রয়োগ করবেন না। এর পরিবর্তে,  পরিষ্কার, মসৃণ এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করুন।  

ত্বকের অ্যালার্জি এবং ফুসকুড়ি

সংবেদনশীল ত্বক হলে আলিভ অয়েল ব্যবহার করা এড়ানো উচিত। সরাসরি এই তেল প্রয়োগ করলে ফুসকুড়ি, অ্যালার্জি এবং একজিমা হতে পারে। এসব ত্বকের সমস্যা থাকলে অলিভ অয়েল খেলেও অস্বস্তি অনুভব হতে পারে।

কার্ডিয়াক সমস্যা

নিয়মিত অলিভ ওয়েল ব্যবহার করা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নাও হতে পারে। এছাড়াও,  অত্যধিক অলিভ অয়েল খেলে শরীরের ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। একই সাথে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে তুলতে পারে। কার্ডিওভাসকুলার অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

রক্তচাপ কমায়

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, অতিরিক্ত পরিমাণে অলিভ অয়েল গ্রহণ করলে কার্ডিয়াক এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। সালাদ বা খাবারে এই তেলের অত্যধিক ব্যবহার আপনার রক্তচাপকে হ্রাস করতে পারে। আপনি দুর্বলতা, মাথা ঘোরা এমনকি কিডনির সমস্যায় ভুগতে পারেন।

রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়

অলিভ অয়েল বেশি গ্রহণ করলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আনে। এই তেল ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এইভাবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাস করে। অত্যধিক অলিভ অয়েল খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া, ঘাম এবং দুর্বলতার মতো স্বাস্থ্য জটিলতায় ভোগার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পরিমিতভাবে জলপাই তেল খাওয়া সর্বোত্তম শারীরিক স্বাস্থ্যের মূল চাবিকাঠি।

প্রদাহ বাড়ায়

অলিভ অয়েল চর্বিতে ভরপুর। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরে প্রদাহ হতে পারে। তাই আঘাত বা সংক্রমণের স্থানে ফোলাভতা বা  লালভাব দেখা দেয়।

পিত্তথলিতে বাধা

শরীরে অতিরিক্ত চর্বি থাকলে অলিভ অয়েল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তা না হলে পিত্তথলি চর্বি নিঃসরণ এবং ইমালসিফিকেশন শুরু করে। এটি শেষ পর্যন্ত পিত্তথলিতে বাধা সৃষ্টি করে।

অন্ত্রের সমস্যা

অলিভ অয়েলে চর্বি বেশি থাকে। অত্যধিক সেবনে ডায়রিয়ার মতো হজম জনিত সমস্যার কারণ হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আমরা অনেকেই কাঁচা জলপাই তেল খেতে পছন্দ করি। এটি বেশ কার্যকর একটি উপায়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি অত্যধিক পরিমাণে গ্রহণ করলে খাদ্য হজম করা কঠিন হতে পারে।

অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি

অলিভ অয়েল ক্যালোরিতে ভরপুর। জানা গিয়েছে, প্রতি ১৬ আউন্স তেলে ক্যালোরি থাকে ৪০০০। যা আপনার দৈনিক ক্যালোরির প্রয়োজনীয়তার দুই দিনের সমান। তাই দিনের প্রধান খাবারগুলো অলিভ অয়েলে রান্না করা উচিত নয়। পরিবর্তে, আপনার সালাদে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল যুক্ত করুন। বিকেলের নাস্তা বা যেকোনো স্ন্যাকস অলিভ অয়েল দিয়ে ভেজে নিন।

মাথার ত্বকে চুলকানি

চুল পড়া সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকেই অলিভ অয়েল ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু, চিটচিটে চুলে অলিভ অয়েল প্রয়োগ করলে মাথার ত্বকে চুলকানি এবং খুশকি হতে পারে। যাদের ত্বক অ্যালার্জিপ্রবণ তাদের মাথার ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। এ ছাড়াও, পাতলা এবং তৈলাক্ত চুলের জন্য অলিভ অয়েল উপযুক্ত নাও হতে পারে।   অনেকে আবার এই তেলের গন্ধে বমিবমি ভাব অনুভব করেন।

সূত্র- পিঙ্কভিলা