ঘুম কম হয়? জেনে নিন কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে
ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাওয়া হলেও অনেকেরই ঠিক মতো ঘুম হয় না। বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতেই চলে যায় রাতের অধিকাংশ সময়।
এমন সমস্যায় যারা ভোগেন, তারা অনেকেই ঘুমানোর জন্য ওষুধের সাহায্য নিয়ে থাকেন। কিন্তু ঘুমের ওষুধের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কম ঘুমের জন্য শরীরে কী কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে তার কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বৃদ্ধি করে
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বা কম হলে বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। চিকিৎসকদের মতে, না ঘুমালে আমাদের শরীরের ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। নষ্ট হতে পারে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য। বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপার টেনশনের মতো সমস্যা।
হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি করে
আমরা যখন ঘুমাই, তখন আমাদের হৃদপিণ্ড ও রক্তনালী কিছুটা হলেও বিশ্রাম পায়। কিন্তু ঘুম না হলে বা কম হলে প্রতিনিয়ত কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা বাড়তে থাকে। এর ফলে হার্টের সমস্যা বাড়তে থাকে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়
দীর্ঘদিন রাতে না ঘুমানো বা কম ঘুমানোর ফলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। যার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে
ঘুম মূলত আমাদের শরীরের ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ও শক্তি সঞ্চয়ের একটি পন্থা। যখন আমরা ঘুমাই, তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী ‘লিভিং অরগানিজম’ কাজ করতে থাকে। কিন্তু আমরা না ঘুমালে এই ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো কাজ করতে পারে না। ফলে ক্রমশ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়
মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওরেক্সিন উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে যায়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম না পেলে অতিরিক্ত বিষণ্ণতা, হ্যালুসিনেশন, স্মৃতিভ্রংশের মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দিনে দিনে নিজের বিচার বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও লোপ পেতে পারে।
হজমের সমস্যা বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বাড়তে পারে হজমের সমস্যাও। আমরা না ঘুমালে আমাদের শরীরের পাচনক্রিয়ায় সাহায্যকারী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে খাবার হজমে সহায়ক পাচক রসগুলো উপযুক্ত মাত্রায় নিঃসরণে বাধা পায়। তাই হজমের নানা সমস্যা শুরু হয়।
আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি। আমাদের দৈহিক প্রায় সব কার্যকলাপই ঘুমের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। তবে যদি নিয়মিত স্বাভাবিকভাবে ঘুম না আসে, তাহলে ইচ্ছেমতো ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।