চকলেট সিস্ট হলে কি বন্ধ্যত্বের সম্ভাবনা বাড়ে

Looks like you've blocked notifications!

অনেক নারীর পিরিয়ড বা মাসিক যন্ত্রণাদায়ক হয়। তরুণীদেরও এ সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। মাসিক যন্ত্রণাদায়ক হলে একসময় চকলেট সিস্ট হতে পারে আর চকলেট সিস্ট থেকে হতে পারে বন্ধ্যত্ব। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে এসব বিষয়ে জানব।

এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে চকলেট সিস্ট বা এন্ডোমেট্রিওসিসসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফার্টিলিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা দীবা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।

প্রথমে আপনি বলেছিলেন বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা নিয়ে একটু জানতে চাই যে বন্ধ্যত্বটা আসলে কতটুকু রিলেটেড, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. ফারজানা দীবা বলেন, বন্ধ্যত্বের অনেকগুলো কারণের মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস বা চকলেট সিস্ট একটি। বন্ধ্যত্বের অন্য অনেক কারণ আমরা সহজে ট্রিটমেন্ট করতে পারি। কিন্তু যে মেয়েটার এন্ডোমেট্রিওসিস বা চকলেট সিস্ট আছে, তার বন্ধ্যত্বের ট্রিটমেন্ট অনেকটা কঠিন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটা হয়, এই মেয়েগুলো অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে, মানে যাঁরা ফার্টিলিটি বা বন্ধ্যত্ব নিয়ে কাজ করেন, তাঁদের কাছে না গিয়ে এমনি এমনি অপারেশন করে ফেলেন। কারণ, মা-বাবা ভয় পায়, একটা সিস্ট হয়েছে। ছোটখাটো সিস্ট, কিন্তু এটা ক্যানসার হবে কি না। দেখা যায়, অপারেশন করে তারপর আমাদের কাছে বন্ধ্যত্ব নিয়ে আসছে। তখন কিন্তু ব্যাপারটা আরও সিরিয়াস হয়ে যায়। কারণ, অপারেশন মানেই এই রোগের সমাধান নয়।

ডা. ফারজানা দীবা বলেন, যত দিন আপনার মাসিক হবে, তত দিন এ রোগটা ছড়াতে থাকবে। রোগটা শুরুই হয় মাসিক থেকে। মাসিকের রক্তটা পেটের ভেতরে জমা হচ্ছে। ওভারির চারপাশে জমা হচ্ছে, তখন চকলেট সিস্ট হচ্ছে। জরায়ুর চারপাশে জমা হচ্ছে, তখন এডিনোমাইসিস হচ্ছে। পায়খানার রাস্তায়, প্রস্রাবের রাস্তায় চতুর্দিকে জমা হতে পারে। কাজেই সার্জারি কিন্তু ট্রিটমেন্ট না। সার্জারি করলেই ভালো হয়ে যাবেন, তা নয়। ছয় মাস, নয় মাস, এক বছর, দুই বছর পরে এটা আবার দেখা দেবে। কাজেই এটা কিন্তু ছড়াচ্ছে। যদিও এটা ক্যানসার নয়, ক্যানসারের মতোই এটি কিন্তু ছড়িয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমরা যেটা করি, এই মেয়েগুলোর মাসিক বন্ধ করে রাখি।

ডা. ফারজানা দীবা যুক্ত করেন, মাসিক বন্ধ করে রাখলে ব্লাড জমছে না। কাজেই ব্লাড না জমলে এন্ডোমেট্রিওসিস ছড়াচ্ছে না। আস্তে আস্তে যেটা ছিল, সেটাও ছোট হয়ে আসে। মাসিক বন্ধ করা হয় দুই ওষুধ দিয়ে। কিছু প্রজেস্টেরন-জাতীয় ওষুধ দিই আর কিছু পিল, যেটাকে আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বলি, সেটা অনেক ক্ষেত্রে এই রোগে ব্যবহার করা হয়। অনেক মা-বাবা সচেতন না। মাসিক বন্ধ করে রাখলে সমস্যা হবে কি না, অন্য কিছু হবে কি না, সার্জারিতে যাব কি না; কারণ, আমাদের দেশে এখনও ওই মনোভাব আসেনি বা ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা অতটা ডেভেলপ করেনি যে একটা ওষুধ খেয়ে একটা পর্যায়ে গিয়ে কাজ হতে পারে।

চকলেট সিস্ট ও বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওতে ক্লিক করুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।