ডায়াবেটিস রোগীরা কী আম খেতে পারবেন?
আর কিছুদিন পরই গ্রীষ্মকাল। এ সময় বাজারে আমের ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। আমের লোভ সামলাতে পারে এমন মানুষ পাওয়া কঠিন ব্যাপার। আম অনেক জাতের হয়ে থাকে। প্রতিটি জাতের আমের রয়েছে অনন্য স্বাদ ও গন্ধ। ডায়াবেটিস রোগীরা আম খাওয়া নিয়ে বেশ দ্বিধায় থাকে। ড. ভি. মোহন, ডায়াবেটিস স্পেশালিটিস সেন্টারের প্রধান ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ টাইমস অব ইন্ডিয়াতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘কাঁচা আম চিনির মাত্রা বাড়ায় না। তবে পাকা আম চিনির মাত্রা বাড়ায়। বিশেষ করে যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে। তবে কিছু নিয়ম মেনে খেলে তা আর ক্ষতি করে না’।
ডাঃ রাহুল বাক্সি, বোম্বে হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডায়াবেটোলজিস্ট, বলেন, ‘যদি আপনার বর্তমান গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে আপনি এই ফলটি উপভোগ খেতে পারবেন। সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে এবং সঠিক উপায়ে।" তার মতে, একটি ফলে ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। প্রতিদিন যে কেউ ফলের মাধ্যমে মোট ৩০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করতে পারবে। তাই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে আম একজন ডায়াবেটিস রোগী অবশ্যই খেতে পারবেন।
একজন নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান, উজ্জ্বলা বাক্সী জোর দিয়ে বলেছেন যে, ‘গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি অবশ্যই খাওয়া উচিত। এমনকি যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদেরও। রোগীর রক্তে যদি শর্করা এবং পটাসিয়ামের মাত্রা সীমার মধ্যে থাকে তাদের অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে রসালো ফল খেতে হবে’। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমে ৬৭% ভিটামিন সি রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। একটি মাঝারি সাইজের আমে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে ৫৫। গ্লাইসেমিক লোড প্রায় ৫ থাকে। যা এটিকে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি নিরাপদ ফল হিসেবে ধরা হয়।
বিশেষজ্ঞরা দিনে আধা কাপ আম খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাদের মতে, শর্করা নিয়ন্ত্রিত রাখতে ডায়াবেটিস রোগীদের দিনে আধা কাপের বেশি আম বেশি খাওয়া উচিত নয়। এটি জুস না করেই খাওয়াই ভাল। এটি টুকরো টুকরো করে খাওয়ার পরামর্শ দেন। খাবারের পরে বা ডেজার্ট হিসেবে আম খেতে নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা জানান, যদি চিনি সম্পূর্ণরূপে অনিয়ন্ত্রিত থাকে। অথবা চিনির মাত্রা ইতিমধ্যেই বেশি তবে আম খাওয়ার আগে চিনির মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের নির্দেশনায় এটি খাওয়া উচিত।
আম সকালের হাঁটার পরে খাওয়া উচিত। ডায়েটিশিয়ানরা পরামর্শ দেন, আমের সাথে শসা, মটরশুটি, বাদাম, বীজ যোগ করে আমের সালাদ খাওয়ার। ডাঃ মোহন বলেছেন ‘খাবারের মাঝে আম রাখা ভালো, কারণ সেই সময় রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি নাও হতে পারে,’ । খাবারের পর ডেজার্ট হিসেবে আম খাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
উজ্জ্বলা বাক্সী বলেন, আম একটি মৌসুমি ফল হওয়ায় সকলের খাওয়া উচিত। যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি আম খান, তাহলে তার অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট (যেমন ভাত বা রুটি) খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভাল। কারণ এটি মোট গ্লাইসেমিক লোড কমাতে সাহায্য করবে। আমে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদেরও উচিত চিনির মাত্রা কমিয়ে হলেও এই ফলটি অল্প পরিমানে খাওয়া
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া