চোখে কর্নিয়াল আলসার কেন হয়, চিকিৎসা কী?

সাধারণত গ্রামের দিকে কৃষকদের মধ্যে কর্নিয়াল আলসারের সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৫৯৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. মাহবুব রহমান শাহীন। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেলের চক্ষু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কর্নিয়াল আলসার বলতে কী বোঝায়? এটি কেন হচ্ছে?
উত্তর : কর্নিয়াল আলসার চোখের খুব বাজে অবস্থা। আমাদের গ্রামে দেখি, যখন কৃষকরা মাঠে-ঘাটে কাজ করে, ধান কাটে, মারাই করে, তখন ধানের আঘাত চোখে এসে লাগে বা পাতার আঘাত লাগে। এগুলো লাগলে চোখের কর্নিয়ায় প্রথম একটু ছিলে যায়। সেখানে ফাঙ্গাস তৈরি হয়। এরপর এটা আলসার হয়ে যায়। রোগীর প্রচণ্ড ব্যথা হয়। দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। চোখ ফুলে যায়। চোখে পানি পড়ে। খুব যন্ত্রণাকাতর অবস্থায় আমাদের কাছে আসে।
এ ক্ষেত্রে গ্রামে দেখা যায়, রোগীরা গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে যায়। তারা হারবাল জিনিস দেয়। তখন রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। কোনো কোনো জায়গায় ধাতব কোনো জিনিস দিয়ে চোখ থেকে কিছু বের করার চেষ্টা করে। এতে চোখ আরো খারাপ হয়। এ সময় চোখ তুলে ফেলা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
অন্ধত্ব প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার একটি প্রোগ্রাম নিয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে ধান কাটার সময় একটি বিশেষ চশমা পরে কাজ করতে হবে। সেটি করলে তখন আর তার চোখে সমস্যা হবে না। এমনকি যারা লেদ মেশিন বা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপগুলোতে কাজ করে, তারা কাজ করার সময় সুরক্ষা গ্লাস পরে নেবে, যেন তার চোখে লোহার কণা বা কণিকা এসে আঘাত না করে। আর কৃষকরাও যখন মাঠে জমিতে কাজ করে, সেটি পরে নেবে। তাহলে চোখ খুব সহজে রক্ষা করা সম্ভব।
প্রশ্ন : যদি সমস্যা হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে জটিলতা কী হতে পারে?
উত্তর : প্রথমেই তাকে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা চক্ষু হাসপাতালে যেতে হবে। গ্রাম্য চিকিৎসায় কাজ হবে না। যাওয়ার পর যদি তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়, প্রায় ৯৫ থেকে ৯৮ ভাগ রোগী ভালো হয়ে যায়। এটা ভালো করা সম্ভব। দেরি যদি হয়ে যায়, সমস্যা যদি বেড়ে যায়। তখন আর কিছু করার থাকে না।