নাকে রক্ত পড়ার চিকিৎসা কী?
নাকে রক্ত পড়ার ভালো চিকিৎসাই আমাদের দেশে আছে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৪৮তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. নাজমুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের নাক, কান, গলা বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : কী কী ধরনের চিকিৎসা আপনারা দিয়ে থাকেন?
উত্তর : যদি এমন হয় নাকের সামনের দিকে তার ছোট্ট ক্ষত আছে, মেডিকেলের ভাষায় বলব যে একটি সেপটাল আলসার আছে। এটি নাকের নিজস্ব সমস্যা। আলসারকে সারিয়ে তুলবার জন্য নাকের ড্রপ, অ্যান্টিবায়োটিক মলম দেই। আর অবশ্যই পরামর্শ দেই, নাকে হাত দেওয়া যাবে না। সেখানে যদি কোনো নাক ফুল থাকে, সেই নাক ফুলটি সেখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এভাবে করে করে আমরা একটা অংশ সেরে ফেলি।
কিন্তু যেই রোগীর ধরেন উচ্চ রক্তচাপ থাকে, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ থাকে, তাকে আমি যতই নাকে ড্রপ দেই, মলম দেই, তাহলে রক্তক্ষরণ আসলে থামবে না। একজন কার্ডিওলজিস্টের কাছে তাকে আমরা পাঠিয়ে দেই। কার্ডিওলজিস্টের কাছে যদি পাঠানোর সুযোগ না থাকে, তাহলে আমরা মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিই। ক্ষেত্র বিশেষ আমরাও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রাথমিক যতটুকু ওষুধ সেটি দেই। উৎসটা আসলে এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ধরেন একটি কিশোর, স্কুলে বা মাদ্রাসায় পড়ে; কথা নেই, বার্তা নেই ঝপ ঝপ করে নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছে, তার নাকটা বড় হয়ে যাচ্ছে, এনজিওফাইব্রোমা হয়েছে, এখানে ড্রপ বা অন্য কিছু দিলে লাভ হবে না। সে রোগী সেরে ওঠবে না। তাকে হাসপাতালে নিতে হবে, যেখানে সব সুযোগ সুবিধা আছে। তাকে ভর্তি করাতে হবে। সব টিউমারকে সেখান থেকে অপসারণ করে দিতে হবে। তাহলে তার রক্তক্ষরণ থেমে যাবে। অন্য দিকে ধরেন যার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছিল, এর কারণে অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট বেড়ে গেছে। অন্য জায়গা থেকেও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাকে শুধু নাকে ওইটুকু চিকিৎসা দিলে তার রক্ত পড়া থামবে না। সামগ্রিকভাবে তাকে ডেঙ্গু জ্বরের জন্য যেই চিকিৎসা দেওয়ার, সেটা দিতে হবে। অর্থাৎ নাকে রক্ত ঝড়ার কারণ অনেক। প্রাথমিক চিকিৎকসার শুরুটা সবার বেলাতে প্রায় একই রকম। ঘাবড়ে যাওয়া চলবে না। আতঙ্কিত হওয়া চলবে না। নাক চেপে ধরে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। ওই সময়ে সম্ভব হলে নাকের মধ্যে একটু বরফ ঘষতে হবে। রোগী যদি খেতে চায় একটি আইসক্রিম ও বরফের টুকরো দিতে হবে। তাৎক্ষণিক সমস্যার সমাধান করে দেখতে হবে আসলে গোড়ায় কী আছে, ওখানে গিয়ে ঠিক নির্দিষ্ট করে তার জন্য যেই চিকিৎসা সেটা করতে হবে। তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।