কিডনি রোগ প্রতিরোধে ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়
ডায়াবেটিস হলে কিডনিও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে একটু সচেতন হলে ডায়াবেটিস রোগীরা কিডনি রোগ প্রতিরোধ করতে পারবেন। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৭৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শামীম আহম্মেদ। তিনি জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক ও অধ্যাপক।
প্রশ্ন : যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের বেলায় বাড়তি কী সতর্কতা প্রয়োজন?
উত্তর : প্রথম জিনিস হলো ডায়াবেটিস হলে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াবেটিসের পাঁচটি স্তর আছে। প্রথম ও দ্বিতীয় স্তর তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে তৃতীয় যেই স্তরটি, সেটি কিন্তু আমরা ধরতে পারি। অর্থাৎ ১০০টা লোকের ডায়াবেটিস হলে সবাই কিন্তু কিডনির রোগে ভুগবে না। ডায়ালাইসিস বা ট্রান্সপ্ল্যান্টের দিকে যাবে না। তাহলে তারা কারা? যদি ডায়াবেটিস চলা অবস্থায় তার প্রোটিন লিক করে, মাইক্রোঅ্যালবুমিন করলে আমরা সেটি বুঝতে পারব। এটি হলো ডায়াবেটিসের তৃতীয় স্তর। এই পর্যায়ে তার রক্তচাপ বাড়বে।
এ পর্যায়ে প্রথম ডায়াবেটিস হলে কিডনির জিএফআর বেড়ে যায়। এই পর্যায়ে জিএফআরটি কমতে থাকবে। তাহলে আমার প্রথম কাজ হচ্ছে এই পর্যায়ে রোগীকে ভালো করে ধরতে হবে। অর্থাৎ আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সংক্রমণ থাকলে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর যদি তার ওষুধের কোনো প্রভাব থাকে, সেটাও আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেই সঙ্গে সঙ্গে ওজন কমান, কায়িক পরিশ্রম করেন, টাটকা শাকসবজি খান, ফলমূল খান, ব্যথানাশক ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে খাবেন না। আর বিশুদ্ধ পানি দুই লিটার খান। এই নিয়মগুলো যদি আমরা মানি, তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ডায়াবেটিস থেকে যে কিডনি ফেইলিউর হয়, এটি হতে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে। কাজেই আপনি যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তাহলে এটি ৩৫/৪০ বছর পরে হবে। কাজেই আমি যেটি মনে করি, ডায়াবেটিস থেকে যে কিডনি রোগ, সেটি সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায়। ডায়াবেটিসের এখন অনেক ভালো ভালো ওষুধ আছে। মুখে খাওয়া যায়, ইনসুলিন দেওয়া যায়। আজকাল সমন্বয় করে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। দুই হলো হাঁটা। যখন কোনো ওষুধ কাজ করে না, হাঁটলে সুগারটা পেশির ভেতর ঢুকে যায়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি পরিমিত খাবেন, পরিমিত বিশ্রাম করবেন এবং আধা ঘণ্টা সময় বের করবেন হাঁটার জন্য। ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন আপনাকে হাঁটতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে কিডনি রোগ অনেকটাই প্রতিরোধ করা যাবে।