যক্ষ্মার চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ নয়
একসময় বলা হতো, ‘যার হয় যক্ষ্মা, তার নাই রক্ষা।’ কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। নিয়মিত মাত্রায় এবং নির্দিষ্ট মেয়াদে চিকিৎসা নিলে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভালো হয়।
রোগ নিশ্চিতভাবে ধরা পড়লে স্বাস্থ্যকর্মীর তত্ত্বাবধায়নে নিয়মমাফিক ওষুধ খেতে হবে। ছয় মাস, নয় মাস, ১২ মাস ইত্যাদি বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসা করতে হয়। মূলত মুখে খাবার ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা চলে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে ইনজেকশনের প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিৎসায় কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন : কমলা রঙের প্রস্রাব হওয়া, জন্ডিস দেখা দেওয়া, হাত-পা জ্বালাপোড়া, ঝিঁঝিঁ ধরা ইত্যাদি। রোগীকে এ ব্যাপারে আগেই জানিয়ে রাখতে হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য নিজে নিজে ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
যক্ষ্মা নিয়ে এখনো সমাজে অনেক কুসংস্কার রয়েছে। যক্ষ্মা ভালো হয়—এ তথ্যটিও এখনো অনেকের অজানা। একটু ভালো হয়ে গেলে কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয় অনেকেই।
মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধের কারণে রোগটি জটিল হয়ে পড়ে। জীবাণুগুলো বিশেষ প্রতিরোধ ক্ষমতা লাভ করে। এরা তখন হয়ে ওঠে আরো ভয়ংকর। এর নাম মাল্টি ড্রাগ রেজিস্টেন্ট (এমডিআর) টিবি। তখন আর ওষুধ কাজ করতে চায় না। জনস্বাস্থ্যের জন্য এটা একটা বিরাট হুমকি।
তবে সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা নিশ্চিত করা গেলে, সবাইকে চিকিৎসার আওতায় আনতে পারলে এবং রোগী, রোগীর স্বজন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যম, সমাজসেবক সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে ২০৩০ সালে যক্ষ্মা নির্মূল করা অসম্ভব নয়।
লেখক : রেসিডেন্ট, বিএসএমএমইউ।