হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথায় কী করবেন?
মাথাব্যথাকে সাধারণ সমস্যা ধরা হলেও, সবসময় কিন্তু এটি সাধারণ নয়। রোগীর লক্ষণ দেখে আমরা মাথাব্যথাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করতে পারি।
মাথাব্যথার মধ্যে একটি হলো টেনশন হেডঅ্যাক অথবা দুশ্চিন্তার জন্য মাথাব্যথা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আমাদের প্রত্যেককে কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। বাসায় ফেরার পর হয়তো দেখা যায় মাথার পুরোটাজুড়ে, কপাল, চোখসহ এক ধরনের ব্যথা হচ্ছে। গালেও এক ধরনের চাপ তৈরি হয়। এ ধরনের ব্যথাকে আমরা সাধারণত টেনশন হেডঅ্যাক বলি।
আরেক ধরনের মাথাব্যথাকে বলা হয় ক্লাস্টার হেডঅ্যাক। ক্লাস্টারের ধরনটি এই রকম যে দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই ব্যথা হয়।
আরেকটি প্রচলিত মাথাব্যথা হলো মাইগ্রেন। মাইগ্রেনের বিষয়টি এ রকম—এখানে যদি আগে থেকে কোনো অ্যালার্জিজনিত অবস্থা থাকে, যেমন কানে যদি কারো সংক্রমণের সমস্যা থাকে, কারো যদি নাকে কোনো সংক্রমণ থাকে, কিংবা মুখের কোনো বায়ু গহ্ববরে সংক্রমণ থাকে, তাহলে সেখান থেকে মাইগ্রেনের সূত্রপাত হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকে একটি লক্ষণ রোগীরা বুঝতে থাকে। সেটি হলো চোখে লাল নীল তারা দেখা।
এই তিন ধরনের মাথাব্যথার চিকিৎসা প্রণালি তিন ধরনের। টেনশন হেডঅ্যাকের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল বা অ্যানিএনালজেসিক ওষুধ কাজ করতে পারে। ক্লাস্টার হেডঅ্যাকের ক্ষেত্রেও তাই। তবে মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে ওষুধ খাওয়ার পরপর রোগীকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়। যেমন রোগীকে তখন আলো আছে এমন ঘর থেকে সরিয়ে এনে একটু অন্ধকার ঘরে নিতে হবে। রোগী যেন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা বিশ্রামের মধ্যে থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ব্যথার ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে কিছু ঘুমের ওষুধও চিকিৎসাপত্রে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাকে কিছু প্রেশারের ওষুধও চিকিৎসাপত্রে দিতে হবে। এভাবে আপনারা মাথাব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
যে ধরনের মাথাব্যথাই হোক না কেন সেটা দুশ্চিন্তার জন্য হোক বা সেটা ক্লাস্টার ধরনেরই হোক, কিংবা সেটা মাইগ্রেনের জন্যই হোক—যেকোনো ওষুধ গ্রহণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন। যদিও আমরা ক্লাস্টার হেডঅ্যাক বা টেনশন টাইপ হেডঅ্যাকের জন্য স্বাভাবিক ব্যথার ওষুধই খেতে বলি। কিন্তু তারপরও অবশ্যই আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
মাইগ্রেনের যে অসুখটাকে খুব প্রচলিত এবং সাধারণ ভাবছেন, সেটা অবশ্যই কোনো সাধারণ অসুখ নয়। যদিও সেটা ব্যথার ওষুধ খেলে ভালো হয়ে যায়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন।
অনুলিখন : শাশ্বতী মাথিন