অস্টিওআরথ্রাইটিসের চিকিৎসায় হাঁটুর প্রতিস্থাপন
হাঁটুর ব্যথা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেলে টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি বা হাঁটুর প্রতিস্থাপন করা হয়। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭০৫ তম পর্বে কথা বলেছেন ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি ডা. পারভেজ আহসান।
প্রশ্ন : অস্টিওআরথ্রাইটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে কী ধরনের সার্জিক্যাল ব্যবস্থাপনা আপনারা নেন?
উত্তর : অস্টিওআরথ্রাইটিসের রোগীর ক্ষেত্রে আমরা নি কেয়ার বা টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট (হাঁটু প্রতিস্থাপন) সার্জারি করি। এটা অত্যন্ত সহজ উপায়। বাংলাদেশে এটি হয় খুব অল্প খরচে।
প্রশ্ন : টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট বলতে এখানে কী বোঝাচ্ছেন?
উত্তর : এখানে হাঁটুর ১১ মিলিমিটার মানে এক সেন্টিমিটারেরও কম ওপরের যে হাড় সেটি ফেলে দিয়ে, ওখানে সিমেন্ট দিয়ে একটি নতুন, বিকল্প একটি কাপ বসানো হয়।
এটাই হলো নি রিপ্লেসমেন্ট। অনেকে ভয় পেয়ে যায়। ভাবে, তার চামড়ার ওপরে জয়েন্টকে সরিয়ে দিয়ে কিছু করা হবে। সে ধরনের কিছু না। খুবই আধুনিক চিকিৎসা।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সাড়ে সাত লাখ নি রিপ্লেসমেন্ট করা হয় প্রতিবছর। ব্রিটেনেও প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ করা হয়। সেটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি চিকিৎসা পদ্ধতি।
প্রশ্ন : কোন কোন প্রতিষ্ঠানে গেলে রোগীরা এই সুযোগ পাবে?
উত্তর : বড় বড় প্রতিষ্ঠিত যেসব হাসপাতাল বাংলাদেশে আছে, সরকারি- বেসরকারি পর্যায়ে সেখানে এই সার্জারি খুব সফলভাবে করা হয়। নিটোরে খুব সফলভাবে নি রিপ্লেসমেন্ট করা হয়।
প্রশ্ন : এই সার্জারি শেষ হওয়ার পর রোগীদের প্রতি আপনাদের পরামর্শ কী থাকে ?
উত্তর : যদি তার কো মরবিডিটি বা ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলব। রোগী কতদিন পর হাঁটবে, কতদিন পর হাঁটু ভাজ করবে, কতটুকু তার হাঁটু ভাজ আসবে, এসব একটি পদ্ধতি অনুযায়ী আমরা উপদেশ দিয়ে থাকি। দেখা যাচ্ছে, রোগীরা খুব ভালোভাবে নিয়ম পালন করলে তরুণ বয়সে যে হাঁটু ছিল, সেই বয়সে ফিরে যেতে পারবে।
প্রশ্ন : তার জীবনযাপন পরিবর্তনের বিষয়ে বা খাবার দাবার পরিবর্তনের বিষয়ে কি কোনো পরামর্শ থাকে ?
উত্তর : এ ক্ষেত্রে রোগীকে আমরা কয়েকটি উপদেশ দেই। রোগী যেন ওজনটা ঠিক রাখে। এরপর সে যেন বেশি দৌঁড়াদৌড়ি না করে। হাঁটুর ওপর খুব বেশি চাপ পড়বে এমন কিছু যেন সে না করে। এ সময় তাকে বেশি কাজ না করতে বলা হয়। তবে সে স্বাভাবিক জীবনের সব কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সে কাজই বন্ধ করে দিচ্ছে। সেটি যেন না করে। সে স্বাভাবিক জীবনের সব কাজই করবে।
প্রশ্ন : এই চিকিৎসা নেওয়ার পর কী তার অন্য কোনো চিকিৎসার দরকার আছে?
উত্তর : এ ক্ষেত্রে আমরা একটু ক্যালসিয়াম নির্ভর ওষুধ দেই যেন তার হাড়টা শক্ত থাকে। ব্যথার ওষুধ আমরা কখনোই দেই না। এটা হচ্ছে এর সবচেয়ে ইতিবাচক দিক।