ছানির সার্জারি কীভাবে করা হয়?
ছানির সার্জারি বিভিন্নভাবে করা যায়। তবে সবচেয়ে আদর্শ হলো ফ্যাকো সার্জারি। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৭০৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ আই হাসপাতালের গ্লুকোমা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম নজরুল ইসলাম।
প্রশ্ন : ছানির ক্ষেত্রে কী সার্জারি রয়েছে?
উত্তর : বাংলাদেশে বিশ্বমানের ছানির অস্ত্রোপচার হচ্ছে। আমরাই করছি। এমন কোনো সার্জিক্যাল পদ্ধতি এখন বিদেশে নেই, যেটা বাংলাদেশে হচ্ছে না। সবচেয়ে আধুনিক হলো লেজার ক্যাটারেক্ট সার্জারি। অর্থাৎ রোবোটিক লেজারের সাহায্যে চোখের ভেতরের লেন্সকে আমরা ভাগ করে গলিয়ে ফেলি। এটিও কিন্তু এখন বাংলাদেশে আছে। বাংলাদেশের হাসপাতালে আমরা এটি করছি। এটা অবশ্য সব জায়গায় নেই। অল্প কয়েকটি জায়গায় রয়েছে। এটা সবচেয়ে আধুনিক একটি অস্ত্রোপচার। তবে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড হলো ফ্যাকো সার্জারি। ফ্যাকো ইমালসিফিকেশন সার্জারি। লেজার গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড নয়। কারণ, এটি সব জায়গায় নেই। সবাই করতেও পারেন না। বাংলাদেশের বেশিরভাগ চিকিৎসক এখন ফ্যাকো সার্জারি করতে পারেন। আমাদের মেশিনপত্র রয়েছে।
ফ্যাকো সার্জারিতে ছোট্ট একটি নিডল দিয়ে ছিদ্র করা হয়, চোখের ভেতর ঢোকার পর। ছানি যেটি রয়েছে সেটির ওপরের পর্দা একটু গোল করে, ৫/৬ মিলিমিটার গোল করে কেটে নিয়ে আসি। এরপর ভেতরে যে লেন্সটা রয়েছে—এটা আমরা ফ্যাকো মেশিনের সাহায্যে প্রথমে দুই ভাগ, পরে চার ভাগ, পরে আট ভাগ করি। টুকরো টুকরো করে বের করে নিয়ে আসি। ফ্যাকো মানে লেন্স। ইমালসিফিকেশন মানে গলানো। লেন্স গলিয়ে আমরা বের করে নিয়ে আসছি।
প্রশ্ন : এই পুরো প্রক্রিয়াটি করতে কতটুকু সময় লাগছে?
উত্তর : এটি প্রায় ৯ মিলিমিটারের একটি আকার। তবে আমরা দুই মিলিমিটারের মধ্য দিয়ে চলে আসছি। পরে আমরা দুই মিলিমিটারের মধ্য দিয়ে ভাজ করা যায়, এমন একটি লেন্স জায়গায় মতো বসিয়ে দিচ্ছি। যেহেতু ছিদ্রটা অনেক ছোট, আমরা একটু পানি দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেই। এখানে সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না। সাধারণত আজকাল আমরা কোনো ইনজেকশন দেই না। আমরা জেল বা ড্রপ এনেসথেসিয়া দিয়ে কাজটি করে থাকি। এই সম্পূর্ণ পদ্ধতিটিতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। এটি আধুনিক পদ্ধতি।
অনেকে ইনজেকশন দিয়ে করেন। এটি করলে যে সমস্যাটা হতে পারে, সেটি হলো, চোখ একটু ছোটো হয়ে যায়। ভবিষতে চোখ ছোটো হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করি তাদের বুঝিয়ে এই অস্ত্রোপচার করতে।