কিডনির পাথরের বর্তমান চিকিৎসা কী?
কিডনির পাথর নিরাময়ে বর্তমানে অনেক আধুনিক ও সহজ চিকিৎসা রয়েছে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৪০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. শরীফুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কিডনির পাথরের বর্তমান চিকিৎসা কী?
উত্তর : চিকিৎসার অনেক বিবর্তন হয়েছে। আমরা যদি ঐতিহাসিকভাবে দেখি, মিসরে মমিদের ভেতরও স্টোন ডিজিজের সন্ধান পাওয়া গেছে। অনেক ইনভেসিভ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হতো আগে।
আস্তে আস্তে ওপেন সার্জারি ( কেটে সার্জারি) আসে। এটি একটি লম্বা সময় ধরে চলে আসছে, এখনো চলছে। তবে বর্তমান যে পাথর ব্যবস্থাপনার চিকিৎসা, ওপেন সার্জারি, এটি ১০ ভাগেরও কম লোকের লাগে। বাকি সব পাথরের চিকিৎসা আমরা ইনভেসিভ (আক্রমণাত্বক) পদ্ধতি বা নন ইনভেসিভ (অনাক্রমাত্বক) পদ্ধতিতে করি।
১৯৮০ শতকের গোড়ার দিকে নন ইনভেসিভ পদ্ধতির ক্ষেত্রে এসেছে স্টোন ক্রাশ করা। এটি এক সময় বেশ প্রচলিত ছিল। এর কিছু সুবিধা অসুবিধা থাকার কারণে, আরো অগ্রবর্তী হয়েছে।
এখন আমরা কিডনি পাথরের ক্ষেত্রে ফুটো করি। ফুটো করে এন্ডোস্কোপ ঢুকিয়ে, সেখান থেকে পাথর ভাঙ্গার কিছু মেকানিজম আছে, এগুলো দিয়ে আমরা পাথর ভেঙ্গে গুঁড়ো করে নিয়ে আসতে পারি। এটাই এখন পাথর নিরাময়ে আদর্শ চিকিৎসা হিসেবে পরিচিত। এর পর ১৯৯৬- এ শুরু হয়, লেজার সার্জারি। এ ক্ষেত্রে আমরা একটি অ্যান্ডোস্কোপ কিডনিতে ঢুকিয়ে, লেজার দিয়ে পাথরটি বের করে নিয়ে আসি। বর্তমানে শকওয়েভ লিথুয়েটিপসি চলছে, পাশাপাশি অ্যান্ডোস্কোপিও চলছে। পাথর ক্রাশ করার যে প্রক্রিয়া, এটি চলছে, অ্যান্ডোস্কোপিও চলছে।
প্রশ্ন : পাথর ক্রাশ করার পর অনেক রোগীর অভিযোগ থাকে, আবার পাথর হয়েছে। আবার চিকিৎসা লেগেছে। এই বিষয়টি কী?
উত্তর : শক ওয়েভের মাধ্যমে এই পাথরটিকে একদম গুঁড়ো করে দেওয়া হয়। গুঁড়ো করার পর এটি পরিষ্কার হতে অনেকগুলো বিষয় নির্ভর করে। যদি ফেবারেবল কিডনি এনাটমি থাকে, পাথরের আকার যদি ছোট থাকে, তার ড্রেইনিং সিস্টেম যদি ঠিক থাকে- আর এসব বিষয় বিবেচনা করে যদি স্টোন ক্রাশ করা হয়, সব বিষয় বিবেচনা করে যদি পাথর ক্রাশ করা হয়, তাহলে এটি একটি উপযোগী পদ্ধতি। তবে যদি পাথরের আকার নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি থাকে, স্টোন বাল্ক বেশি থাকে, পুরোপুরি ভাঙা না যায় তাহলে ভাঙা গেলেও সেটি বের করা যায় না। সেই জন্যই ভোগান্তিগুলো হয়।