কিডনি বিকল : চিকিৎসা কী?
কিডনি বিকল হওয়ার সমস্যাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। হঠাৎ কিডনি বিকল ও দীর্ঘ মেয়াদে বা ধীরগতিতে কিডনি বিকল। কিডনি বিকল হওয়ার চিকিৎসা কী? এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৫৭তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর কবির। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিডনি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রশ্ন : এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কীভাবে করেন?
উত্তর : হঠাৎ কিডনি বিকলের সমস্যা নিয়ে যদি আসে, আমরা তখন কিডনির কার্যক্রমগুলো পরীক্ষা করি। বিশেষ করে আমরা করি ইউরিয়া ক্রিয়েটিনিন। সে ক্ষেত্রে আমরা কিছু ওষুধ দিই। এটা তরল কমে যাওয়ার জন্য হয়। তরল কমে গেল, রক্তচাপ কমে গেল কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ এলে আমরা চেষ্টা করি পানিশূন্যতার ঘাটতি পূরণ করার। এরপর দেখব যে প্রস্রাব হচ্ছে।
অনেক সময় দেখা যায় যদি দেরি করে আসে, সে ক্ষেত্রে তরল দিলে ফুলে যায়, তবে প্রস্রাব তৈরি হয় না।
প্রশ্ন : হঠাৎ বিকল হওয়ার ক্ষেত্রে কখন রোগী আপনাদের কাছে আসবে?
উত্তর : হঠাৎ কিডনি বিকলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তারদের কাছ থেকে রেফার হয়ে আসে। অথবা রোগীই চলে আসে। বলে, ‘আমার প্রস্রাব হচ্ছে না। শরীর ফুলে গেছে।’
তখন আমরা ইতিহাস নিলে দেখি তার ডায়রিয়া হয়েছিল অথবা তার রক্তপাতের কোনো বিষয় ছিল বা বমি হয়েছিল, শরীর থেকে তরল বেরিয়ে গিয়েছিল। আমরা চেষ্টা করি দ্রুত তরল দিয়ে রক্তচাপকে স্বাভাবিক করার। এতে তার প্রস্রাব হতে থাকবে। যদি প্রস্রাব না হয়, আর তরল দেওয়ার পর যদি দেখা যায় তার অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে আমরা তাকে বলি ডায়ালাইসিস করার জন্য। এটি হলো হঠাৎ বিকল হওয়ার ক্ষেত্রে।
আর ক্রনিকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যার ডায়াবেটিস আছে, তার হয়তো ১৫ থেকে ২০ বছর পর কিডনি নষ্ট হচ্ছে। যার রক্তচাপ আছে, তারও ১০ থেকে ১৫ বছর পর কিডনি নষ্ট হচ্ছে।
সে ক্ষেত্রে তার প্রথমে অস্বাভাবিক দুর্বলতা হবে। স্বাভাবিক যে কাজগুলো করার কথা, সেগুলো করতে তার দুর্বল লাগবে। তার ইতিহাস নিয়ে যদি কিডনি ফাংশন টেস্ট বা ক্রিয়েটিনিন করেন, তাহলে হয়তো দেখা যাবে তার কিডনি বিকল হয়েছে। একে আমরা বলব ধীরগতিতে কিডনি বিকল।
একজন ডায়াবেটিসের রোগী বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী যখন এই উপসর্গগুলো দেখবে, তখনই চিকিৎসকের কাছে যাবে। এমনকি না দেখলেও এসবের বিষয়ে তাদের খেয়াল রাখতে হবে।