বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা, করণীয়
উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা। পানি নেমে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন চলছে। এ সময়ে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়।
বন্যার সময় যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা হয়
• বন্যার সময় পানিবাহিত রোগগুলো বেশি হয়। কারণ, তখন পানির উৎসগুলো সংক্রমিত হয়। নলকূপ ডুবে যায়। বিশুদ্ধ পানির অভাব, দূষিত পানির কারণে এ রকম হয়।
আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস হয় সবচেয়ে বেশি। তাই এই রোগগুলো থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
• কিছু মশাবাহিত রোগ হয়, যেমন—ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু। আটকে থাকা পানিতে এই রোগের জীবাণুগুলো সহজেই বংশবিস্তার করতে পারে।
• ফাঙ্গাসজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়, বিশেষ করে বন্যা-পরবর্তী সময়টাতে। এ সময় নানা রকম চর্মরোগ, চোখের অসুখ হয়। স্ক্যাবিস, আঙুলের মাঝখানে ঘা, টিনিয়া ইনফেকশন এ সময়ে খুব বেশি দেখা যায়।
• কৃমির প্রকোপ বাড়ে এ সময়ে।
• আবহাওয়া ও তাপমাত্রার তারতম্যজনিত কারণে নানা রকম ভাইরাসজনিত অসুখ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, সাইনোসাইটিস ইত্যাদি দেখা দেয়।
করণীয়
• বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করাই হলো প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।
• পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। খোলা পানি পান করবেন না।
• প্রয়োজনে হ্যালোজেন ট্যাবলেট দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করে নিতে হবে। প্রচলিত ফিল্টার দিয়ে পানির জীবাণুমুক্তকরণ সম্ভব হয় না।
• বাড়িতে সব সময় শুকনো খাবার মজুদ রাখার চেষ্টা করুন। খাবার স্যালাইনও যেন পর্যাপ্ত থাকে।
• পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে ও পায়খানা করার পর হাত ধুতে সাবান ব্যবহার করবেন।
• সব সময় হাত-পা পরিষ্কার রাখবেন। বন্যার পানিতে বেশিক্ষণ পা ডোবালে ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। তাই বারবার কুসুমগরম পানি দিয়ে হাত-পা ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে হাত-পা শুকিয়ে নিতে হবে।
• কৃমিনাশক ওষুধ খেতে হবে।
• জ্বর, জন্ডিস, পেটের অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
প্রকৃতির এই দুর্যোগ কেটে যাক দ্রুত। সবাই ভালো থাকুক। অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকুক।
লেখক : রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।